পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা শাসন বন্ধ করতে হবে: অমল ত্রিপুরা
ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) এর সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন বাংলাদেশ সরকার পাহাড়ি জাতিসত্তার অস্তিত্ব ধ্বংস করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অঘোষিত সেনা শাসন জারি রেখেছে। যার ফলে পাহাড়ি জনগণের ওপর দমন-পীড়ন-নির্যাতন থামেনি এবং তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আশির দশকে স্বৈরাশাসক এরশাদের শাসনামলের মতই বর্তমানেও পাহাড়ে সেনাবাহিনী শাসন-শোষন চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করার মাধ্যমে সেখানে চলমান সেনা শাসন বন্ধ করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) দুপুর ১২টায় ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসে’ গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সমাবেশের আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি টিএসসি থেকে শুরু করে অপরাজেয় বাংলা, কলবাগান হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে ডাকসু ভবনের সামনে এসে এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সাধারণ সম্পাদক দীলিপ রায়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি অনিক রায়, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি দীপা মল্লিক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহম্মেদ চৌধুরী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা।

স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অমল ত্রিপুরা বলেন, তৎকালীন স্বৈরাশাসক এরশাদ বেআইনিভাবে ক্ষমতা দখল করার পর তার সরকারের শিক্ষামন্ত্রী মজিদ খানকে দিয়ে একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছিল। সেখানে শিক্ষা সংকোচন, সাম্প্রদায়িকতা, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যয়ভার ৫০ ভাগ ছাত্র ও অভিবাবকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে শিক্ষা অধিকার দাবি নিয়ে ‘৮৩ সালে ছাত্র সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং আজকের দিনে ছাত্রদের মিছিলে এরশাদ সরকারের পুলিশ বাহিনী গুলি চালিয়ে জাফর, জয়নাল, কাঞ্চন, মোজাম্মেফ ও দীপালি সাহাসহ নাম নাজানা আরো অনেককে হত্যা করেছিল। রক্ত ঝড়া সেই দিনের ছাত্র সমাজের কাঙ্ক্ষিত দাবি আজ ৪০ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার হরন করে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার স্বৈরাশাসক এরশাদের ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, সরকার পাহাড়ি জাতিসত্তার অস্তিত্ব ধ্বংস করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অঘোষিত সেনা শাসন জারি রেখেছে। যার ফলে পাহাড়ি জনগণের ওপর দমন-পীড়ন-নির্যাতন থামেনি এবং তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নব্বই দশকে স্বৈরাশাসক এরশাদের শাসনামলের মতই বর্তমানে পাহাড়ে সেনাবাহিনী শাসন-শোষন চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করার মাধ্যমে সেখানে চলমান সেনা শাসন বন্ধ করতে হবে।
সমাবেশ থেকে তিনি ফ্যাসিবাদী সরকারের চলমান দুঃশাসন অবসানের লক্ষ্যে সারাদেশে গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে বক্তারা, সারাদেশে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস, নির্যাতন বন্ধ করা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতসহ ফ্যাসিবাদী সরকারেন দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষে ঐক্যবদ্ধ হাওয়ার জন্য ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে সকাল ৯ টায় শিক্ষা অধিকার চত্ত্বরে ছাত্র জোটের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।
সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন