পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী নিপীড়কের ভূমিকা পালন করছে : মশাল মিছিলে বক্তাদের অভিযোগ

0

ঢাকা : অপহৃত হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মশাল মিছিল করেছে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়ন বিরোধী নারী-যুব-ছাত্র সংগঠনসমূহ’। বৃত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিনয়ন চাকমা ও বাংলাদেশে ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ও প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক গোলাম মোস্তফার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদানের পর আজ ২ এপ্রিল (সোমবার) সন্ধ্যা ৭ টায় মশাল মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়। এরপ মিছিলটি শাহবাগ ঘুরে এসে টিএসসি, জগন্নাথ হল ও  শামসূন্নাহার হলের পাশের রাস্তা প্রদক্ষিণ শেষে আবার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যর মাধ্যমে মিছিলটি আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়। এতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন এইচডব্লিউএফ-এর সভাপতি নিরূপা চাকমা।

প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক গোলাম মোস্তফা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে উদ্ধারের জন্য কোন তৎপরতা চালাচ্ছে না অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সেখানে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের পাহারাদার হিসেবে ভূমিকা রাখছে। বিভিন্ন দেশে আমাদের দেশের সামরিক বেসামরিক বাহিনীর সদস্যরা শান্তি রক্ষা করতে যায় এবং সেখান থেকে সম্মান মর্যাদা কুড়িয়ে আনলেও তাঁরা নিজ দেশে নিপীড়কের ভূমিকা পালন করছে। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী কর্তৃক বহু খুন, ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনা ঘটছে বলেও মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, নানিয়াচরে সেনা হেফাজতে রমেল চাকমার মৃত্যু হয়েছে, ইউপিডিএফ নেতা মিঠুন চাকমাকে সন্ত্রাসী দিয়ে খুন করা হয়েছে। আমরা এর পরিবর্তন চাই। এজন্য আজকে আমরা ছাত্র-যুব-নারীরা একত্রিত হয়েছি।

পাহাড়সহ সারাদেশে খুন, গুম, অপহরণ, নারী ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, আমরা এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি। বাংলাদেশে কোন নাগরিকের আজ নিরাপত্তা নেই। আমরা কেউ নিরাপদে শান্তিতে থাকতে এবং চলাফেরা করতে পারছি না। এর বিরুদ্ধে পাহাড় ও সমতলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। এবং মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানান।

এইচডব্লিউএফ সভাপতি নিরূপা চাকমা বলেন, আমরা গত ৩০ মার্চ রাঙামাটির নানিয়াচরে এক সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে একটি প্রতিনিধিদল গিয়েছিলাম। সে সমাবেশে সেনাবাহিনী বিনা ‍উস্কানিতে হামলা চালিয়ে পণ্ড করে দিয়েছিল। এতেই মন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমাকে অপহরণের পেছনে সেনাবাহিনীর জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে।

সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নারী মুক্তির সভাপতি সীমা দত্ত, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু, শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর সভাপতি বহ্নি শিখা জামালী, বিপ্লবী নারীমুক্তির আহ্বায়ক নাসিমা নাজনীন, নারী সংহতির সহসাধারণ সম্পাদক রেবেকা নিলা, বিপ্লবী নারী ফোরামের সদস্য আমেনা আক্তার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী)-এর সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (খালেকুজ্জামান)-এর সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন প্রিন্স, ছাত্র ঐক্য ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার আল ইমরান, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ, জাতীয়ছাত্র দলের কেন্দ্রীয় সদস্য রাজু আহমেদ প্রমুখ।

এছাড়াও মশাল মিছিলে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ মোট ১৯ টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
_________
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More