পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে চট্টগ্রামে প্রতিবাদী সমাবেশ

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতিবাদী সমাবেশ করে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ নামের একটি সংগঠন। সমাবেশের পূর্বে তারা একটি মিছিল বের করে।
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন করে নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতিবাদী সমাবেশ করেছে ‘ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ’ চট্টগ্রাম মহানগর শাখা।
আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর ২০২৪) বিকাল ৪টায় চেরাগি পাহাড় মোড় থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রেসক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবার চেরাগি পাহাড় মোড়ে এসে প্রতিবাদী সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের নেতা কিরণ চাকমা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট এক ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ও দেশত্যাগের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন দেশ পরিচালনা করছে। এই সরকার দেশকে হাসিনার কুশাসন থেকে মুক্ত করতে বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিয়োগকৃত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের সরিয়ে দিয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিচ্ছে। এই প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সরকার অবশেষে গত ৭ নভেম্বর তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করেছে। আমরা সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।
কিন্তু আমরা আশা করেছিলাম সরকার একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদও পুনর্গঠন করবে। আমাদের প্রশ্ন, জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করা হলে, আঞ্চলিক পরিষদ কেন পুনর্গঠন করা হচ্ছে না?

তিনি আরো বলেন, ১৯৯৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন পাস করার পর ১৯৯৯ সালের ২৭ মে হাসিনার সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করেছিল। সেই সময় এই পরিষদে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তারা এখনও একনাগাড়ে ক্ষমতায় রয়েছে। গত ২৫-২৬ বছরে কোন সরকার আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন বা পুনর্গঠন করেনি; এমনকি পুনঃনিয়োগও দেয়নি। অথচ পরিষদের মেয়াদ হলো ৫ বছর। সুতরাং বর্তমানে যারা আঞ্চলিক পরিষদে রয়েছে, তারা বৈধভাবে আছে কীনা দেখা দরকার। এছাড়া আঞ্চলিক পরিষদ কী কাজ করে, তার জবাবদিহিতা কোথায়, তার তহবিলের হিসাব কী এসব বিষয়ে আমরা সাধারণ জনগণ কিছুই জানি না। জনগণের উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হলেও, জনগণের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই, জনগণের কাছে তার কোন দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নেই। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে, নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে এবং এরপর এই সরকারের আমলে তিন জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগি ও সুবিধাভোগিদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকেও ফ্যাসিস্ট শাসন মুক্ত করে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।