পাহাড়ি আওয়ামী লীগারদের সুবিধাবাদীতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করুন

0
সিএইচটিনিউজ.কম

রাজনৈতিক ভাষ্য: 

 খাগড়াছড়ির চাকমা আওয়ামী লীগ নেতারা গত ৪ আগষ্ট শহরের একটি কমিউনিটিসেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খেদ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘খাগড়াছড়িতেএমপি এবং পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দুজনই ত্রিপুরা সম্প্রদায়েরফলে শিক্ষা ও চাকুরীর সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা, টিআর-কাবিখা বণ্টনে স্বজনপ্রীতি ও উন্নয়নপ্রকল্প গ্রহণে চাকমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছেতারা চাকমা সম্প্রদায়কে যথাযথমূল্যায়ননা করায় সরকারের ওপর ক্ষুদ্ধতাদের অভিযোগ, ‘খাগড়াছড়িতে দীর্ঘ দিন ধরে আওয়ামী লীগের মতো বড়ো দলের রাজনীতি করার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুটিআঞ্চলিক দলের রোষানলের শিকার হতে হচ্ছে চাকমাদের‘ (সুপ্রভাত বাংলাদেশ, ৫ আগষ্ট
সংখ্যা)
সুবিধাবাদী, ধান্দাবাজ ও সুযোগ সন্ধানী ওই চাকমা আওয়ামী লীগ নেতাদেরকথাশুনে অনেকের মনে হতে পারে যে, এরা কত স্বজাতিপ্রেমিক; যেন তারা চাকমা জাতিকেউদ্ধারে নেমেছেচাকমা জাতির জন্য তাদের দরদ যেন উপছে পড়ছেচাকমারা বিভিন্নসুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে তারা যেন মহা ক্ষুদ্ধএটা তারা যেন কোনমতেই সহ্য করতে পারছে না, তাই সংবাদ সম্মেলন করে তারা তাদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরারপ্রয়াস পেয়েছে
নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য চরম ধিকৃত গণশত্রুরাও এভাবে জনগণের বা স্বজাতির নামভাঙায়এটা সবার জানা কথাযখন অন্য কোনভাবে এরা সুবিধা করতে পারে না, যখনঅন্য কোন উপায়ে নিজের আখের গোছাতে বা আখের রক্ষা করতে পারে না, তখন নিজেদেরমুখোশ ও স্বার্থকে আড়াল করার জন্য এরা এই কৌশলের আশ্রয় নেয়, স্বজাতির প্রতি মহাদরদী সেজে বসেসেজন্য স্যামুয়েল জনসন বলেছেন, দেশপ্রেম হলো একজন বদমাশের শেষআশ্রয়(Patriotism is the last refuge of a scoundrel: Samuel Johnson). স্যামুয়েল জনসনযে কত সত্য কথা বলেছেন তা এই চাকমা আওয়ামী লীগারদের কাণ্ড দেখে বোঝা যায়

চাকমা আওয়ামী লীগারদের কানে ধরে প্রশ্ন করা উচিত — যখন চাকমারা নির্যাতিতহয়, যখন তাদের ঘরাবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়, যখন তাদের জমিজমা কেড়ে নেয়া হয়, যখনতাদের মা বোনের ইজ্জত হরণ করা হয়, তখন তোমাদের জাতপ্রেম দেশপ্রেম কোথায় যায়? তখন তোমাদের মুখ বন্ধ থাকে কেন? তখন তোমরা সংবাদ সম্মেলন আয়োজন কর না কেন?
যখন সাজেক-খাগড়াছড়ি জ্বলে, লংগুদুতে হামলা হয়, রামগড়-মানিকছড়িতে গ্রামের পরগ্রাম ধ্বংস করে দেয়া হয়, যখন এর প্রতিবাদে সবাই সোচ্চার হয়, লণ্ডন-আমেরিকা-জাপান-কোরিয়া-ভারতসহ বিশ্বের যেখানে পাহাড়ি সেখানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়, তখনতোমরা কোথায় থাকো, ইঁদুরের মতো কোন গর্তে লুকিয়ে থাকো? তখন তোমাদেরজাতপ্রেম কোথায় যায়? গত বছর সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে চাকমাসহসব সংখ্যালঘু জাতিগুলোকে বাঙালি বানানোর প্রতিবাদে যখন প্রত্যেকটি পাহাড়ি
রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানাল, তখন হে স্বজাতি-দরদীগণ, তোমরা কোন অন্ধকার গুহায়লুকিয়েছিলে? তখন তো তোমাদের টিকিটিও দেখা যায়নিআর এখন তোমরা কতই নাচাকমা-দরদী, স্বজাতিপ্রেমী হয়ে গেছো! তোমরা কি মনে কর, আমরা তোমাদের ধান্দাবুঝি না? পত্রিকা-ওয়ালারাও তোমাদের ধান্দাবাজি ধরতে পেরেছে; আর তাই একটি বাদেঅন্য কোন পত্রিকা তোমাদের খবর ছাপায়নি
চাকমা আওয়ামী লীগাররা জনগণের ওপর নিপীড়ন নির্যাতনের প্রতিবাদ থেকে একশআলোকবর্ষ দূরে হলেও, নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এরা সব কিছু করতে পারে, নিজেরলজ্জা শরম পর্যন্ত বিসর্জন দিতে পারে৪ আগষ্টের সংবাদ সম্মেলন হলো তার প্রমাণতাদের ভাষায় চাকমা সম্প্রদায়কে মূল্যায়ন করা হচ্ছে নাএর মানেটা কী? এর মানেবোঝে না এমন বোকা কি আছে? মোট কথা হলো, সরকারের ফেলে দেয়া খুদকুড়োথেকে তারাও ভাগ পেতে চায়এত বছর ধরে আওয়ামী লীগ করেও তারা মুখে লালা ঝরিয়েঅন্যের খুদকুড়ো খাওয়া দর্শন করতে বাধ্য হচ্ছেভাগ পেলে, তাদের পকেটেও মাল পড়লে তারাবেমালুম চুপ হয়ে যাবে; তখন চাকমা সম্প্রদায় ধ্বংসের মুখোমুখি হলেও তাদের মুখথেকে চাকমারা বঞ্চিত হচ্ছেএই কথা শোনা যাবে না, প্রেস কনফারেন্সে তাদেরমুখগুলো আর দেখা যাবে না, যেমন অতীতে দেখা যায়নি
তাদের মূল কথা হলো, খাগড়াছড়ির এমপি ত্রিপুরা হওয়ার পরও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানপদে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়ার কারণে চাকমারা বঞ্চিত হয়েছেএদের কথার সুর পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক এবং সে জন্য নিন্দনীয়বঞ্চিত হলে তোমারমাদেরও হওয়ার কথা, কিন্তু তাদের কথা তো সংবাদ সম্মেলনে এই আওয়ামী ধান্দাবাজরাবলেনিতাদের সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের মাধ্যমে যারা লাভবান হয়েছে তারা হলোসেনাবাহিনী ও সরকার তথা শাসকগোষ্ঠী, চাকমা সম্প্রদায় নয়কারণ সরকার ওসেনাবাহিনীর নীতি হলো এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অন্য সম্প্রদায়কে, এক জাতিরবিরুদ্ধে অন্য জাতিকে লাগিয়ে দিয়ে নিজেদের শাসন শোষণ চিরস্থায়ী করাএই চাকমাআওয়ামী লীগ নেতারা শাসকগোষ্ঠীর এই ফাঁদে পা দিয়ে ভাগ কর শাসন করনীতিরগুটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে
এমপি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উভয়েই ত্রিপুরা হলেও সাধারণ ত্রিপুরা জনগণের কি কোনউন্নতি হচ্ছে? ত্রিপুরাদের দুএকজনের পকেট ভারী হচ্ছে, তাদের কেউ কেউ আঙুলফুলে কলাগাছ হচ্ছে তা সত্য, কিন্তু সাধারণ ত্রিপুরাদের বা জনগণের জীবন মানের কোনউন্নতি হয়নি, তাদের অবস্থা এখনো আগের মতো দিন আনতে পানতা ফুরায়একইভাবে, গেল বিএনপি আমলে একজন চাকমা প্রতিমন্ত্রী জলদাস থেকে টাকার কুমীর বনে গেলেওসাধারণ চাকমাদের তথা জনগণের অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নিসরকারে এখনো একজনচাকমা মন্ত্রী আছে, তাতে চাকমাদের ভাগ্যের কি পরিবর্তন হয়েছে? খাগড়াছড়ি,বান্দরবান ও রাঙামাটি এই তিন জেলা পরিষদে আজ পর্যন্ত কেবল মারমারাই চেয়ারম্যাননিয়োগ লাভের সুযোগ পেয়েছেকিন্তু তাই বলে তিন জেলায় সাধারণ মারমাদের ভাগ্যেরকি কোন উন্নতি ঘটেছে?
যে সব চাকমা চাকমাদের উন্নতি চায়, যে সব ত্রিপুরা ত্রিপুরাদের উন্নতি চায়, যেসব মারমা মারমাদের উন্নতি চায়, যে সব ম্রো ম্রো জাতির উন্নতি চায় (অন্যান্যজাতিগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য), তাদের উচিত হবে সব নিপীড়িত জাতিগুলোকে ঐক্যবদ্ধকরে সংগ্রাম করা, শাসকগোষ্ঠীর শোষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াকারণকোন জাতির উন্নয়নের প্রথম শর্ত হলো আগে শোষণ নিপীড়ন থেকে মুক্তিপার্বত্যচট্টগ্রামে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রোসহ সকল জাতিসত্তার জনগণ চরম নিপীড়নের
শিকারএই অবস্থা থেকে মুক্তি লাভ ছাড়া তাদের সার্বিক বিকাশ ও উন্নতি সম্ভবনয়আজ বাঙালি জাতি পাকিস্তানী শাসন শোষণ থেকে মুক্তি লাভ করেছে বলেই তারাকিছুটা হলেও উন্নতি লাভ করতে পেরেছেতারা যদি এখনো পাঞ্জাবী শাসকদের অধীনেথাকতো, তাহলে নিঃসন্দেহে তারা এতদূর তাদের জাতীয় বিকাশ ঘটাতে পারতো না
সংগ্রামের জন্য দরকার ঐক্যপার্বত্য চট্টগ্রামে সকল নিপীড়িত জাতি ও জনগণকেঐক্যবদ্ধ করতে হলে প্রত্যেক জাতিসত্তাকে সমান মর্যাদা দিতে হবেএটা ঠিক যে, সব জাতিসত্তা বিকাশের একই স্তরে নয়তারা বিকাশের বিভিন্ন স্তরে রয়েছেকিন্তুসমমর্যাদার জন্য এটা কোন বাধা নয়জাতিগুলোর মধ্যে ঐক্যের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হলোউগ্র ও সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদআমরা উগ্রবাঙালি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামকরবো, অথচ নিজেরাই উগ্রজাতীয়তাবাদী হবো, তা তো ঠিক নয়উগ্র বাঙালিজাতীয়তাবাদ যেমন খারাপ, উগ্র ও সংকীর্ণ চাকমা জাতীয়তাবাদও খারাপঅনুরূপভাবেসংকীর্ণ ত্রিপুরা জাতীয়তাবাদ, সংকীর্ণ মারমা জাতীয়তাবাদও ভ্রান্তএই দুই বাদ –উগ্র ও সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ জাতিগুলোকে বিভক্ত ও সংকীর্ণ গণ্ডীতে আবদ্ধ করে রাখেএবং উন্নতির দিকে নিয়ে যায় না
এটা ঠিক, পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমারা অন্যান্য জাতিসত্তাগুলোর চাইতে কিছুটাএগিয়ে (তবে খুব বেশী নয়)এ জন্য তাদের উচিত পিছিয়ে পড়া জাতিগুলোকেশিক্ষাদীক্ষা ও রাজনৈতিক চেতনা-সৃষ্টিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে সাধ্যমতসহায়তা দেয়াতাদের উন্নতি ও বিকাশের মধ্যেই চাকমাদের স্বার্থ নিহিতকারণঅন্যদের পিছনে ফেলে রেখে তারা নিজেরা কখনো এগিয়ে যেতে পারবে নাকিন্তু সংবাদসম্মেলনে চাকমা আওয়ামী লীগাররা ঠিক বিপরীত কাজটাই করেছেতাদের দৃষ্টিভঙ্গীএতটাই সংকীর্ণ যে, নিজেদের ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থ ছাড়া তারা আর কিছুই দেখতে পায়না
এখন তাদের বড়ো দলের রাজনীতি করার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুটি আঞ্চলিকদলের রোষানলের শিকারহওয়া প্রসঙ্গে কিছু বলা দরকারপ্রথমেই প্রশ্ন করতে হবে, তথাকথিত বড় দল করে পাহাড়ি জনগণের কী লাভ হয়েছে? আওয়ামী লীগ-বিএনপির স্বার্থও পাহাড়িদের স্বার্থ কি এক? আওয়ামী লীগ করে দুএকজনের হালুয়া-রুটি জুটেছে, কিন্তু সাধারণ জনগণের কি সামান্যতম লাভ হয়েছে? লাভ তো নয়, বরং তিই হয়েছেএতবছর বড় দলের রাজনীতি করার ফল হলো সাংবিধানিকভাবে বাঙালিহয়ে যাওয়াআওয়ামীলীগকে ভোট দিয়ে পাহাড়িরা বিনিময়ে এটাই পেয়েছেআদিবাসী-দরদীআওয়ামীলীগ এখন আদিবাসীশব্দটিকেই মুছে ফেলতে তৎপরএতদিন জনগণকে বিভ্রান্তকরার জন্য তারা আদিবাসী আদিবাসী বলে মুখে ফেনা তুলেছিলঅথচ আজ যদি তিনএমপির মধ্যে একজন হলেও স্বতন্ত্র অথবা যে কোন একটি আঞ্চলিক দলের লোক হতো, তাহলেবড় কিছু করা তার পক্ষে সম্ভব না হলেও অন্ততঃ পঞ্চদশ সংশোধনীর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েবিশ্ববাসীকে সে জানিয়ে দিতে পারতো পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ পঞ্চদশ সংশোধনীমেনে নেয়নিযে তিন এমপি বীর-যতীন-দীপংকর বাঙালি হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে, তারা তো কেবল ব্যক্তি নয়, তারা আপনার আমার অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের পক্ষহয়ে ভোট দিয়েছেকারণ আমাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আমরা তাদেরকে সংসদেপাঠিয়েছিতারা সংসদে জনগণের পক্ষ হয়েই কথা বলেসংসদে তারা যে ভোট দেয় তা  আমাদের নামেই দেয়
দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, আমাদের কী নিজেদের লাগানো গাছে পানি দেয়া উচিত, নাকি অন্যের লাগানো গাছে পানি দেয়া কর্তব্য? এত বছর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিরগাছের গোড়ায় পানি ঢেলে পাহাড়িরা কী পেয়েছে? আওয়ামী লীগের গাছের ফল কিআমরা খেতে পাচ্ছি? অথচ সবাই যদি নিজেদের গাছগুলো (নিজেদের দল ইউপিডিএফ)পরিচর্যা করতাম, তাহলে এতদিন তার ফল পেতামমনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ, বিএনপিতাদের নিজেদের গাছের ফল পাহাড়িদেরকে দেবে নাসেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থারলোকজন চায়, পাহাড়িরা নিজেদের দল না করে আওয়ামী লীগ, বিএনপির মতো তথাকথিতবড় দল করুকঅর্থাৎ আওয়ামী লীগ বিএনপির গাছে পানি সিঞ্চন করুকএতে তাদেরসুবিধা, কারণ অধিকাংশ শিক্ষিত পাহাড়িরা যদি আওয়ামী লীগ, বিএনপির লুটপাটেররাজনীতি নিয়ে মশগুল থাকে, তখন জনগণের উপর নির্যাতন হলে বা ভূমি বেদখল হলে, তারবিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কেউ থাকবে না; শাসকগোষ্ঠী নির্বিঘ্নে তার শাসন শোষণচালিয়ে যেতে পারবেসেনা গোয়েন্দারা জানে, যে সব পাহাড়ি আওয়ামী লীগ-বিএনপিকরে তারা কখনোই পাহাড়ি জনগণের ওপর অত্যাচার হলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে না
পাহাড়ি আওয়ামী লীগাররা হয়তো তাদের স্বপক্ষে সংগঠন করার অধিকার, মত প্রকাশেরঅধিকারের কথা বলবেআমরা অবশ্যই জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবংআমরা চাই তারা বেশী বেশী করে নিজেদের মত প্রকাশ করুকতারা রাজনৈতিকভাবেসক্রিয় হোক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নীতি আদর্শ ও কর্মসূচী বুঝতে ও বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হোক, যাতে তারা নিজেরাই বিচার বিবেচনা করে নিজেদের সিদ্ধান্তনিতে পারে, যাতে কেউ তাদেরকে ঠকাতে না পারেকিন্তু যারা গণশত্রু, দালাল, ধান্দাবাজ, যারা জনগণের মাথায় কাঠাল ভেঙে খায়, জনগণকে বিভ্রান্ত করার অধিকার তাদের নেইজনগণের মধ্যে অনৈক্য ও সাম্প্রদায়িক বিভক্তি সৃষ্টি করার অধিকার তারা পেতে পারেনামত প্রকাশের অধিকার আছে বলে কেউ যদি কোন রোগমুক্তি লাভের জন্য চিকিৎসারতঅসুস্থ ব্যক্তিকে সাহস ও শক্তি যোগানোর পরিবর্তে তাকে বলে, ‘তোমার রোগ ভালো হবেনা, তুমি কাল মরে যাবে, শেষ হয়ে যাবে‘, তখন কি সেই ব্যক্তির মুখ বন্ধ করে দিয়ে রুমথেকে বের করে দিলে অন্যায় হবে? ঠিক তদ্রুপ, পরাধীন পাহাড়ি জাতির জনগণকে সাহসও শক্তি না যুগিয়ে, তাদেরকে আন্দোলনে উৎসাহিত না করে, যারা জাতীয় দাসত্বের পক্ষেপরাজয়বাদী ও আত্মসমর্পনবাদী লাইন প্রচার করে এবং বিভ্রান্তি ছড়ায়, তাদের মুখ বন্ধকরে দেয়া হলে জনগণের উপকারই হবেকারণ সে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে অপব্যবহার করেজাতি ও জনগণের তি করছেমত প্রকাশের স্বাধীনতা আর জনগণকে বিভ্রান্ত করা একজিনিস নয়
সুতরাং যে সব পাহাড়ি আওয়ামী লীগ-বিএনপি করে তারা শাসকগোষ্ঠীর মতবাদ, দর্শনও কর্মসূচীই প্রচার করে, যা পাহাড়ি জনগণের স্বার্থের বিরোধীতারা জনগণেরঅধিকার আদায়ের আন্দোলনে আভ্যন্তরীণ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেতারা আন্দোলনেজনগণকে কেবল নিরুৎসাহিত করে না, তারা তাদেরকে সুবিধাবাদী ও ধান্দাবাজ হতেওপ্ররোচিত করেএজন্য এদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক, মতাদর্শিক ও কর্মসূচীগতসংগ্রাম পরিচালনা করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। [সমাপ্ত]
———–
৭ আগষ্ট ২০১২

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More