পোড়া তাইন্দং: পাহাড় থেকে পাহাড়ি উচ্ছেদের রঙ্গমঞ্চ
তাইন্দং এর সর্বেশ্বর পাড়ায় যেসব ঘরে আগুণ দেয়া হয়েছে তার একটি প্রভাত চন্দ্র চাকমার। কথা প্রসঙ্গে জানা গেল ভাঙা টিলা নামক স্থানে তার জমিকে নিজের জমি বলে দাবী করছেন আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তার আলী অথচ ভাঙা টিলায় প্রভাত চন্দ্ররা দীর্ঘদিন ধরে সেগুন বাগান করছেন। মুক্তার আলী ৮৮ সালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সেটলার হিসেবে যখন এই এলাকায় আসেন তখন মুক্তার আলীর নামে ৫ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয় যা মুক্তার আলীর দাবী অনুসারে ভাঙা টিলায় অবস্থিত। মুশকিল হলো কবুলিয়ত গুলোতে জমির সীমানা এমন ভাবে বিভিন্ন ঝোপঝাড়, টিলা, গাছ ইত্যাদি দ্বারা চিহ্নিত করা থাকে যার ফলে এক কবুলিয়াত ব্যাবহার করে একাধিক জায়াগা দাবী করা সম্ভব এবং তা করা হয়ও। তাছাড়া জাল কবুলিয়াতের মাধ্যমেও পাহাড়িদের জায়গা জমি দখল করা হয়েছে এবং হচ্ছে। মুক্তার আলীদের কবুলিয়াত যদি জাল নাও হয় তাহলেও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই দখল পাহাড়িরা মানবে কেন? পাহাড়িরা যুগ যুগ ধরে যেসব জমিতে বসবাস ও চাষাবাদ করছেন, সেসব জমি কাউকে কবুলিয়াত করে দেয়ার কোন এক্তিয়ার রাষ্ট্রের নেই। তারপরেও মুক্তার আলীর মতো মানুষদেরকে রাষ্ট্রীয় ভাবে সমতল থেকে পাহাড়ে এনে এভাবে পাহাড়িদেরকে নিজভূমে পরবাসী করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় ও প্রাশাসনিক পৃষ্ঠপোষকতায় সেই প্রকৃয়া জারি আছে। কথিত শান্তি চুক্তির পরে এই প্রকৃয়া বন্ধ হওয়ার বদলে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পাহাড়ি জমি আরো লোভনীয় হয়ে উঠেছে, সেটলার বাঙালিরা পাহাড়িদের জমির উপর দখল দাবী করা কবুলিয়াত বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করছে, কোম্পানির কাজ হলো দখলের কাজটি বাস্তবায়িত করে গাছ, ফল, কাঠ, মাছ, রাবার, চা ইত্যাদির ব্যাবসা করা।