বগাছড়িতে পাহাড়ি গ্রামে হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ ১২ ছাত্র সংগঠনের
সিএইচটিনিউজ.কম
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে রাংগামাটির নান্যাচর উপজেলাধীন বগাছড়িতে সেনা-সেটলার কর্তৃক পাহাড়ি বসতবাড়ি-দোকানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের ১২টি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে যৌথ স্বাক্ষরে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে অতীতেও বিভিন্ন সময়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও এবার খোদ বিজয় দিবসে এ ধরনের হামলার ঘটনাকে কোনভাবে ধামাচাপা দেয়ার বা সাদামাটাভাবে দেখার অবকাশ নেই। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিজয় দিবসে নিজেরাই পেট্রোল ঢেলে পাহাড়িদের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে যে গুরুতর অপরাধ সংঘটিত করেছে, জরুরি ভিত্তিতে এর সুষ্ঠু তদন্ত এবং অবিলম্বে বগাছড়ি হামলার সাথে জড়িত সেনা ও সেটলার সর্দারদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
পাহাড়ি গ্রামে হামলাকে ধৃষ্টতাপূর্ণ আখ্যায়িত করে যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, ‘বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য কর্তৃক এ বিশেষ দিবসটিতে পেট্রোল ঢেলে পাহাড়িদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মারধরে অংশগ্রহণের বিষয়টিকে অবশ্যই গুরুত্বের সাথে আমলে নিতে হবে। নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনীর সদস্যরা যদি জাতীয় দিবসের গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়, নিজেরাই বিজয় দিবসকে কালিমা লিপ্ত করে ফেলে, তাহলে তারা দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষার পরিবর্তে কোন কায়েমী স্বার্থবাদী চক্রের স্বার্থে নিয়োজিত রয়েছে, স্বাভাবিকভাবে সে প্রশ্নও এসে যায়।’
যৌথ বিবৃতিতে ১২ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘বগাছড়ির সেটলাররাই গোটা বাঙালি জাতি নয়, তারা একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। গোটা জাতীয় স্বার্থ ও মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত করে কোটি কোটি হতদরিদ্র মানুষকে বঞ্চিত করে অন্যায়ভাবে সেটলারদের রেশন ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পোষার কোন মানে হয় না। আশির দশকে নানা প্রলোভন দিয়ে পাহাড়িদের মালিকাধীন জায়গা-জমিতে সেটলার বসিয়ে দিয়ে জাতিগত বিদ্বেষ ও বৈরিতা সৃষ্টি করা, গুরুতর রাজনৈতিক ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। তা সত্ত্বেও সেটলারদের রাষ্ট্রীয়ভাবে নানাভাবে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে যা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।’
স্ব স্ব সংগঠনের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি সামিউল আলম রিচি, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক সাদিক-উর রহমান, ছাত্র গণ মঞ্চের সুজিত সরকার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রী চক্রবর্তী রিন্টু ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি থুইক্যচিং মারমা, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক বিপ্লব ভট্টচার্য্য, জাতীয় ছাত্র দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তৌফিক হাসান পাপ্পু, ল্যাম্পপোষ্টের আশীষ কোড়ায়া, গণমুক্তি গানের দলের ফারহানা হক শামা, প্রগতি পরিব্রাজক দলের আদিত্য মাহমুদ, বিজ্ঞান চেতনা পরিষদের ইমদাদুল হক, সংস্কৃতি নয়া সেতুর সাজ্জাদ হোসেন।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিপুল চাকমার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনগুলোর যৌথ স্বাক্ষর করা বিবৃতিটি পাঠানো হয়েছে।
————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।