বগাছড়িতে সেনা-সেটলার হামলার এক বছর : প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি প্রশাসন

0

সিএইচটি নিউজ ডটকম

বগাছড়ির সেটলার হামলার দৃশ্য। # ফাইল ছবি
বগাছড়ির সেনা-সেটলার হামলা-অগ্নিসংযোগের দৃশ্য। # ফাইল ছবি

নান্যাচর প্রতিনিধি : আজ ১৬ ডিসেম্বর রাঙামাটির বগাছড়িতে সেনা-সেটলার হামলার এক বছর পূর্ণ হয়েছে। গতবছর (২০১৪) এই দিনে দেশে বিজয় দিবসের উৎসব চলাকালে নান্যাচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের বগাছড়িতে তিনটি পাহাড়ি গ্রামে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের মধ্য দিয়ে বিজয় উৎসবে মেতেছিল সেনা-সেটলাররা। পুড়ে ছাই করে দেওয়া হয় তিনটি গ্রামের প্রায় ৬০টি ঘর-বাড়ি। বাস্তুহারা-আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে শিশু-নারী-বৃদ্ধসহ দেড় শতাধিক মানুষ। সেদিন সেনাবাহিনী ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে পাহাড়িদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আর সেই সুযোগে সেটলাররা হুড়হুড় করে গ্রামে ঢুকে ঘরবাড়ি-দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাংচুর চালায়। স্বচ্ছল পাহাড়িদের নিঃস্ব-সহায়সম্বলহীন করে ফেলে। একটি স্বাধীন দেশে বিজয় দিবসের মতো একটি মহান দিনে এমন বর্বর হামলা কারোর কাম্য ছিল না। ‘৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীই এমন অমানবিক হামলা চালিয়েছিল এই বাংলার গণমানুষের উপর।  পার্বত্য চট্টগ্রামে এ ধরনের হামলা দেখে আমাদের সেই ‘৭১’র কথাই মনে করিয়ে দেয়।

হামলার পর রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের হর্তাকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ঘর তৈরি করে দেয়ার ও পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্র্যীসহ ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছরেও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি তারা। কিছু ঘর তৈরি করে দেয়া হলেও প্রয়োজনের তুলনায় সেগুলো খুবই কম। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার এখনো ঘরবাড়ি বিহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

অন্যদিকে চিহ্নিত হামলারীরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে পাহাড়িদের এখনো আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে।

এদিকে, গত ১০ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো রাঙামাটি সদরের ডিসি অফিসের  সম্মুখে মানবন্ধন করে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি এবং প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বাড়িঘর নির্মাণ করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই দাবিতে তারা গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করেছেন এবং আজ বুধবার অনশন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানা গেছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত তিন সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনও ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে সংহতি জানিয়ে মঙ্গলবার ঢাকা ও খাগড়াছড়িতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করেছে।
—————–

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More