বর্মাছড়িতে সেনা ক্যাম্প স্থাপন: জনদুর্ভোগ সৃষ্টি

0
বর্মাছড়িতে ক্যাম্প স্থাপন করতে আসা সেনারা।


বর্মাছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়িতে আর্য কল্যাণ বনবিহার ও স্থানীয়দের জমি বেদখল করে সেনা ক্যাম্প নির্মাণের প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় জনদুর্ভোগ শুরু হয়েছে।

সেখানে অবস্থানরত সেনারা বর্মাছড়ি টু খিরাম রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলি মারমা ও বর্মাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুইচালা চৌধুরীসহ অনেককে ওই রাস্তা দিয়ে যেতে দেয়া হয়নি। সেনারা তাদেরকে বাধা দেয়। ফলে তাদেরকে ঘোরা পথে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।

বর্মাছড়ি বাজারের ব্যবসায়ীরা ওই রাস্তা দিয়ে দোকানের মালামাল আনা-নেওয়া করে থাকেন বিধায় রাস্তা বন্ধ হলে তারা বড় ধরনের ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এছাড়া এলাকার লোকজনকেও চলাফেরায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হবে। খিরাম, নানুপুর ও চট্টগ্রামের সাথে যোগাযোগ করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

পাহাড়িরা দৈনন্দিন জীবন ধারণের প্রয়োজনে বন ও ছড়া-ঝিরির ওপর নির্ভরশীল। সেনাদের উপস্থিতির কারণে আশেপাশের গ্রামের লোকজন বনে যেতে পারছে না। ছড়ায় মাছ-কাঙারা ধরতে যেতে পারছে না।

ক্যাম্প হলে তাদের আরও বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হবে। বাড়িতে থাকাও তখন অনিরাপদ হয়ে পড়বে। পাহাড়িদের পরিবারগুলো সাধারণত ছোট হয়ে থাকে। বাড়ির পুরুষ সদস্যরা বা বড়রা কাজে বাইরে গেলে মেয়েদেরকে একা থাকতে হয়।

এ সময় তারা টহলরত সেনা সদস্যদের যৌন হামলার সহজ লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। মোট কথা, সেনা ক্যাম্প হলে গ্রামের নারীদেরকে চরম অনিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হবে।

তাছাড়া ঘরের বাইরে চলাফেরা করতেও তাদের অসুবিধা হবে। ঘরে বাইরে রাস্তাঘাটে তারা অনিরাপদ হয়ে পড়বে। এমনকি অনেক নারীর বিহারে যাওয়াও বন্ধ হয়ে যাবে। অথচ বিহারের অনেক কাজে নারীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।

সেনারা রাত বিরাতে ঘোরাফেরা করবে, ঘরবাড়ি তল্লাশি-হয়রানি করবে।

এসব কারণে বর্মাছড়ি এলাকাবাসী শুরু থেকে সেখানে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধীতা করে আসছে। গতকাল তারা গণ বিক্ষোভ করে ও স্মারকলিপি দিয়ে ক্যাম্প স্থাপন না করার দাবি জানিয়েছে।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More