বর্মাছড়ি বাজার এলাকায় ৪ দিন ধরে একদল সেনা সদস্যের অবস্থান, জনমনে আতঙ্ক

বর্মাছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ৭ আক্টোবর ২০২৫
রাঙামাটির কাউখালী উপজেলাধীন ফটিকছড়ি ইউনিয়নের বর্মাছড়ি বাজার এলাকায় ৪০ জনের একটি সেনাদল চার দিন ধরে অবস্থান করছে। তারা ফটিকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের পাশে অবস্থিত একটি বৌদ্ধ বিহারের জায়গায় কয়েকটি তাঁবু খাটিয়ে রেখেছে। তবে তারা রাতে সেখানে অবস্থান না করে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে অবস্থান করে থাকে। উক্ত স্থানে একটি নতুন ক্যাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন।
জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর ২০২৫ খিরাম আর্মি ক্যাম্প ও লক্ষীছড়ি সেনা জোন থেকে দুটি দলে ৪০ জন সেনা সদস্য বর্মাছড়ি বাজারে আসে। এরপর থেকে আজ (৭ অক্টোবর) পর্যন্ত তারা অবস্থান করছে। এদের মধ্যে খিরাম ক্যাম্প থেকে আসা দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন ক্যাম্প কমান্ডার মেজর সাইফুর রহমান তুর্জো ও লক্ষীছড়ি জোন থেকে আসা দলটিতে জনৈক মেজর নেতৃত্বে রয়েছেন।
সেনারা আসার সাথে সাথে রাস্তায়, দোকানে যাকে পেয়েছে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। লোকজনের কাছ থেকে তারা “এখানে আজকে নাকি ইউপিডিএফ-এর লোকজন মিটিং ডেকেছে, কোথায় মিটিং হচ্ছে? সুনীল কে? সুনীল কোথায় থাকে” ইত্যাদি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে।
সেনেদের এমন প্রশ্নের জবাবে সবাই বলেন, ‘এখানে ইউপিডিএফের কোন মিটিং ছিল না, বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রবারণা পূর্ণিমা পালন উপলক্ষে আমাদের আর্য কল্যাণ বনবিহারে মিটিং করা হয়েছিল। সেই মিটিং বাদে অন্য কোন মিটিং এখানে হয়নি।‘
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অবস্থানরত সেনা সদস্যরা প্রায় সময় বিভিন্ন স্থানে টহলের নামে ঘোরাফেরা করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছে। ঘোরাফেরা করার সময় লোকজনকে হয়রানিমূলক নানা জিজ্ঞাসাবাদ করে থাকে।
আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বর্মাছড়ি বাজারে সাপ্তাহিক হাটবাজারের দিনেও সেনারা বাজারে আসা পাহাড়ি ও বাঙালি অনেক নিরীহ মানুষকে হয়রানিমূলকভাবে তল্লাশি ও নানা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অপরদিকে, দুপুর ২টার দিকে ফটিকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উষাতন চাকমার নেতৃত্বে মেম্বার কার্বারীসহ প্রায় ৯/১০ জনের একটি প্রতিনিধি দল সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আতিকুর রহমানের সাথে কথা বলেন। আতিকুর রহমান প্রতিনিধি দলকে বলেন, ‘জোন থেকে আমারা কোথায় অবস্থান করছি সেটা জানতে চাওয়া হচ্ছে। সে জন্য আমাদের জায়গার মালিকের নাম ও জায়গাটি খাস না রেজিস্ট্রিভুক্ত সেটা জোনে জানাতে হবে।’
প্রতিনিধি দলের প্রধান চেয়ারম্যান উষাতন চাকমা মো. আতিকুর রহমানকে বলেন, ‘বর্মাছড়ি বাজারের একদম সন্নিকটে খিরাম ক্যাম্প ও শুকনাছড়ি ক্যাম্প রয়েছে। সেখান থেকে এখানে প্রতিনিয়ত টহল দেওয়া হয়। অন্যান্য এলাকার মত এখানে কোন অস্থিরতা নাই। চুরি ডাকাতিসহ কোন প্রকারের অপরাধমূলক ঘটনাও সংঘটিত হয় না। সুতরাং এখানে ক্যাম্প স্থাপনের কোন প্রয়োজনীতা নেই। যদি আপনারা জোর করে আমাদের বুদ্ধ বিহারের জায়গায় ক্যাম্প স্থাপনের প্রচেষ্টা চালান তাহলে ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত দেয়া হবে। সেটা আমরা কোন প্রকারে মেনে নেবো না।’
সেনাদের এমন কথাবার্তায় ধারণা করা হচ্ছে হয়তো সেনা নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।