বান্দরবানে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

0
বান্দরবান প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম

বান্দরবান : বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে পড়েছে বান্দরবান পার্বত্য জেলা। জেলার দূর্গম এলাকার ঝিড়ি-ঝর্ণায় পানির উস নষ্ট হওয়ার কারণে প্রত্যন্ত এলাকাসহ পৌর এলাকায় পানির অভাব দেখা দিয়েছে।জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাইলের পর মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ঝিড়ি-ঝর্ণা থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন পাহাড়ি নারীরা। প্রাকৃতিক বন উজাড় এবং ঝিরি-ঝর্ণা থেকে পাথর উত্তোলনের কারণে বান্দরবানে পানির উৎস স্থলগুলো প্রতিনিয়ত শুকিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, পানি প্রবাহ বন্ধের কারণে স্থানীয়রা পানি সংগ্রহ করতে পারছেন না।

জেলার রোয়াংছড়ির লক্ষিচন্দ্র কারবারী পাড়ার মংনূচিং মার্মা জানান, আগে ঝিড়ি-ঝর্ণা থেকে অনেক পানি পাওয়া যেত। কিন্তু গাছ না থাকার কারণে আগের মতো আর পানি নেই ঝিড়ি-ঝর্ণাগুলোতে।জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিশুদ্ধ খাবার পানির কোনো সুব্যবস্থা নেই। ফলে ঝিড়ি-খালের ঘোলা পানি ব্যবহার করতে হয় স্থানীয়দের। এতে প্রায়ই ডায়রিয়াসহ নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হন তারা।

 ২০১১ সালের ১১ জুন আলিকদম উপজেলার পুরাতন ডাকবাংলো এলাকায় পানি শোধণাগার নির্মাণ প্রকল্পের একটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় পানি শোধণাগার নির্মাণ প্রকল্পে এক কোটি ৫৬ লাখ ১৫ হাজার ৮৫০ টাকার বাজেট ধরা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ সুপেয় পানির সুবিধা পাবেন। কিন্তু সেই প্রকল্প এখনো আলোর মুখ দেখেনি।নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ৫২ হাজার মানুষের বসবাস। এদের পানির চাহিদা মেটানোর মতো পর্যাপ্ত নলকূপ নেই। রুমা ও থানচি উপজেলায় বিশুদ্ধ পানির সংকট সবচেয়ে বেশি বলে জানান স্থানীয়রা।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থাগুলোর নির্মাণ করা অধিকাংশ রিংওয়েল ও টিউবওয়েল অকার্যকর।

অন্যদিকে, জিএফ পাইপ লাইনের মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চলগুলোতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য কয়েক কোটি টাকার প্রকল্পও কাজে আসেনি। পৌর এলাকায় দুই-তিনদিন পর ঘণ্টা খানেকের জন্য পানি সরবরাহ করা হলেও বহুতল ভবনে মোটর ব্যবহার করে পানি সংগ্রহ করার কারণে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষ বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এই ব্যাপারে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সোহরাব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বান্দরবান জেলায় পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে, তাই এখানে পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বনাঞ্চল উজাড় ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পানির উ

স স্থলগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। এগুলো সংস্কারের জন্য সরকারে কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য রিংওয়েল, টিউবওয়েল এবং জিএফএস নির্মাণ কার্যক্রম চলছে। এরই মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে গৃহিত প্রকল্পগুলোর সুবিধাও ভোগ করছেন অনেকে।স্থানীয়দের অনেকে জানান, দ্রুত জেলায় পানি সংকট নিরসন না হলে যে কোনো সময় সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসতে পারে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More