চট্টগ্রামে উদ্বিগ্ন নাগরিকবৃন্দের সমাবেশে বক্তারা
বিচারহীনতা ও ক্ষমতার প্রশ্রয়ের ফলে ধর্ষকরা বেপরোয়া

চট্টগ্রাম ।। সারাদেশে ধর্ষণ, নির্যাতন ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে উদ্বিগ্ন নাগরিকবৃন্দ, চট্টগ্রাম এর ডাকে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর), বিকেল ৪ টায় জামালখান, চেরাগী মোড়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এডভোকেট জান্নাত পপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ডা; সুশান্ত বড়ুয়া, কাজী শহীদুল, রোজিনা বেগম, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের নগর সভাপতি রেশমী মারমা, ধর্ষণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের সংগঠক অবিধা ফাইরূজ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা এ্যনি চৌধুরী বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা শোভন দাশ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের নেতা তিতাস চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের নেতা কাজি আরমান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতা রনেল চাকমা। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন সামিউল আলম।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে শিশু ও নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি সিলেটের এমসি কলেজে, পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা সমাজে যে তীব্র্র প্রতিক্রিয়া তৈরী করেছে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সারা দেশে ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্র জনতার বিক্ষোভের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশে বিক্ষোভ চলমান, তখনো ধর্ষণ থেমে নেই। ক্রমাগত বিচারহীনতা ও ক্ষমতার প্রশ্রয়েই ধর্ষকরা আজ বেপরোয়া।

বক্তারা আরো বলেন, বেশীরভাগ ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় অপরাধীরা আইনের আওতা মুক্ত থাকে। উলটো ভিক্টিম ও তাঁর পরিবারকেই হুমকির মুখে থাকতে হয়। জনগণের প্রতিবাদের কারণে কিছু অপরাধীকে গ্রেফতার করা হলেও তাঁরা সহজেই আইনের ফাঁক গলে ছাড়া পেয়ে যায়। সাম্প্রতিক বুশরা ধর্ষণ ও হত্যায় উচ্চ আদালতের রায় এর একটি দৃষ্টান্ত। এমনকি বেগমগঞ্জের নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রেও ঘটনার ৩২ দিন পরে আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর পদক্ষেপ নেয়। শুধু তাই নয় ধর্ষণের মত ঘৃণ্য অপরাধএর ক্ষেত্রে সরকার দলীয় ক্রিমিনালদের ইন্ডেমনিটি দেয়া হয়, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীই ধর্ষণের মত অপরাধ করে ও মদদ দেয়। এই বিচারহীনতা ও ক্রিমিনালদের রাষ্ট্রীয় মদদ দেয়ার ফলে সমাজের সর্বত্র আজকে এই অপরাধ ক্যান্সারের মত ছড়িয়ে পড়ছে। একটা নারী নিপীড়ক, ফ্যাসিস্ট মানসিকতা ছড়িয়ে পড়ছে সমাজে। ঘরে বাইরে কোথাও আজকে নারী ও শিশুরা নিরাপদ নয়। ফলে ধর্ষকদের যথাযথ বিচার নিশ্চিত না করা গেলে শুধুমাত্র মৃত্যুদন্ড দিয়ে ধর্ষণের অবসান সম্ভব নয়।
বক্তারা ধর্ষণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের ব্যানারে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর সরকার দলীয় সংগঠন ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা জানান। পাহাড় ও সমতলে সকল ধর্ষণের বিচারের জন্য অনতিবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তারা।