মহালছড়িতে স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডে শহীদদের স্মরণ

মহালছড়ি প্রতিনিধি ।। খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভরে রাষ্ট্রীয় মদদে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ৩ বছর উপলক্ষে আজ ১৮ আগস্ট ২০২১, বুধবার মহালছড়িতে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদদের স্মরণ করা হয়েছে।
প্রথমে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এতে শহীদ পরিবার, মহালছড়ি এলাকাবাসী, পিসিপি-এইচডব্লিউএফ-ডিওয়াইএফ প্রতিনিধি ও ইউপিডিএফের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শহীদদের সম্মানে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এরপর অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ সভা।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মহালছড়ি উপজেলা শাখা এই কর্মসূচির আয়োজন করেন।
“ভয়ঙ্কর পরিণতি অপেক্ষা করছে, সমাজ বিরোধীরা ধ্বংস হবেই, পূর্ণস্বায়ত্তশাসন কায়েম করে শহীদ তপন-এল্টন-পলাশের রক্তের শোধ নেবো” এই শ্লোগানে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় পিসিপি’র সাবেক নেতা সুমন্ত চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের মহালছড়ি উপজেলা সমন্বয়ক দিগন্ত চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের প্রতিনিধি নিদর্শন খীসা, সাবেক মহিলা মেম্বার মল্লিকা চাকমা, শহীদ এল্টনের ছোট বোন সুখী চাকমা ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিমল চাকমা।

বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালের আজকের এই দিনে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল মোত্তালেব সাজ্জাদের প্রত্যক্ষ মদদে সংস্কার ও মুখোশ সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে গুলি করে ছাত্র নেতা তপন, এল্টন, যুব নেতা পলাশসহ ৭ জনকে খুন করেছিল। বিজিবি ও পুলিশের সম্মুখে এ ঘটনা ঘটলেও তারা ছিল নিরব দর্শকের ভূমিকায়। সেদিন পুলিশ ও বিজিবি যদি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতো তাহলে এমন নির্মম হত্যার ঘটনা সংঘটিত হতে পারতো না। পুলিশ ও বিজিবি’র নিরব ভূমিকায় প্রমাণ করে উক্ত হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের যোগসাজশ ছিল।
বক্তারা রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর নেতিবাচক ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, তথাকথিত নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোই এখানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য দায়ী। তারাই স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডে জড়িত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে খুন, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। অন্যদিকে ইউপিডিএফ ও সাধারণ জনগণের ওপর তারা দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।

বক্তারা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, রাষ্ট্রীয় মদদে সৃষ্ট সন্ত্রাসী রাজাকার-আলবদর, সুবিধাবাদী-লেজুড়দের পার্বত্য চট্টগ্রামের সমাজ, জনগণ ও ইতিহাস কখনোই ক্ষমা করবে না। সময়ের স্রোতে তারা একদিন ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। জনগণই তাদের উপযুক্ত বিচার করবে।
বক্তারা শহীদ তপন-এল্টন-পলাশদের রক্ত কখনো বৃথা যাবে না বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আমরা মুক্তিকামী ছাত্র-তরুণ সমাজ এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবোই। প্রয়োজনে আরো হাজারো শহীদের বিনিময়ে হলেও এই স্থবিরবস্থার শৃঙ্খল ভাঙবো।
স্মরণসভা থেকে বক্তারা আর কালক্ষেপণ না করে স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।