অন্য মিডিয়া
মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাাহড়ি শিক্ষার্থীরা

ছবি : সৌজন্যে রাইজিংবিডি ডটকম
অন্য মিডিয়া ডেস্ক, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫
মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি সরকার বিষয়টি রুটিনে অর্ন্তভুক্ত করে পড়ানোর নির্দেশনা দিলেও তা শুধু রুটিনে থেকে যাচ্ছে।
শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষান্তে, আর দুই/তিন মাস পরে শুরু হবে বার্ষিক পরীক্ষা। নতুন করে শুরু হবে আরেক শিক্ষাবর্ষ। এভাবে বছরের পর বছর যাচ্ছে কিন্তু পড়ানো হচ্ছে না পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষার বই। সরকার প্রতি বছর কোটি টাকা খরচ করে বই ছাপালেও তা বিতরণেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদরের ১ নম্বর প্রকল্প গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস মাহমুদ, ২ নম্বর গরগয্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার চৌধুরী ও মহাজন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিলন কান্তি চাকমা জানান, তাদের বিদ্যালয়গুলো স্ব-স্ব মাতৃভাষার বই পড়ানোর মতো প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকায় পড়ানো যাচ্ছে না। তাদের প্রয়োজন প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ না পেলে এই বইগুলো পড়ানো সম্ভব নয়। এ সমস্যা প্রায় সবকটি বিদ্যালয়েই।
এদিকে, এত বছর পরে হলেও মাতৃভাষার বই রুটিনে অর্ন্তভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়ায় বর্তমান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি দ্রুত যেন শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।
সরকারের প্রতি অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এনসিটিবির মাতৃভাষায় বইয়ের লেখকের প্যানেল সদস্য আর্য মিত্র চাকমা জানান, বহুকাঙ্ক্ষিত মাতৃভাষার কার্যক্রমকে সফল করার জন্য ক্লাস রুটিনে অন্তভুক্তি করা হয়েছে। মাতৃভাষা সফল না হওয়ার পেছনে যারা বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠির শিক্ষক রয়েছেন, তাদের দায় রয়েছে। মাতৃভাষার বিষয়টা সফল করার জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এটা স্থবির হওয়ার কথা না, সচল থাকার কথা।
রুটিনে অর্ন্তভুক্ত করে পড়ানোর নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এগিয়ে আহ্বান জানান।
আরেক প্যানেল সদস্য ভাষা গবেষক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, “আদিবাসী শিশুদের শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রুটিন প্রকাশ করেছেন, এটা একটি ভালো সংবাদ। তবে সমস্যা হলো, অনেক শিক্ষকের এখনো প্রশিক্ষণ নেই, সবাইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। এটা একটা সংস্থা বা এনজিও দ্বারা করে লাভ নেই। পিটিআই এর মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। তবে শিক্ষকদেরও মনোযোগী হওয়া দরকার। অনেক শিক্ষক নানা অজুহাতে মাতৃভাষা পাঠদান করতে চান না। তবে সবাই এগিয়ে এলে সরকারি এ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।”
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “মাতৃভাষার বইগুলো পড়ানো জন্য জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি থেকে ক্লাস রুটিন আসছে। সেখানে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে পড়ানোর জন্য সাব ক্লাষ্টার, ক্লাষ্টার বা পিটিআইয়ের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।”
উল্লেখ্য বিগত সরকার ২০১৭ সাল থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষা শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে।
তথ্যসূত্র: রাইজিংবিডি ডটকম
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।