মানিকগঞ্জে একাধিক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়া সেই শিক্ষা অফিসারকে বান্দরবানে বদলী করায় দুই নারী সংগঠনের নিন্দা ও প্রতিবাদ

0

নিজস্ব প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

মানিকগঞ্জের সিংগাইর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খানকে বান্দরবানে বদলী করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ।

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই ২০২৫) সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কণিকা দেওয়ান এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা এই ধরনের লম্পটদের পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলী না করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দেয়ার দাবি করেন।

নেত্রীদ্বয় অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে “পানিশমেন্ট জোন” হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে সরকার জাতিগত নিধনের নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে। সমতলে যারা ঘুষ, দুর্নীতি, যৌন হয়রানি বা ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে বরং শাস্তিস্বরূপ পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলি করে পাঠানো হচ্ছে।

উদাহরণ দিয়ে তারা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে লম্পট শিক্ষক সোহেল রানার ঘটনা তুলে ধরে বলেন, দৌলতপুরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত সোহেল রানাকে বদলি করে খাগড়াছড়িতে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে, ২০২১ সালে তিনি সেখানে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ছাত্রদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে তাকে গ্রেফতার করা হলেও পরে আবার পুনর্বহাল করা হয়। ছাত্রদের দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে তাকে পুনরায় শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়ার ফলে তিনি আরও এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এই ধরনের লম্পট শিক্ষক-কর্মকর্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ভয়ানক হুমকি।

বিবৃতিতে নেত্রীদ্বয় বাংলাদেশের উগ্রবাদী শাসকগোষ্ঠী “ধর্ষণকে” সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে বলেন, উগ্র শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিসত্তাগুলোকে নিজ বাসভূমিতে কেবল ভিটেছাড়া ও সংখ্যালঘুতে পরিণত করছে তা নয়, নৃতাত্ত্বিকভাবেও শংকর জাতিতে পরিণত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সেজন্য একটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাশালী বিশেষ সংস্থা কর্তৃক পাহাড়ি নারী ধর্ষণের ক্ষেত্রে মেডিকেল রিপোর্ট প্রদানের ব্যাপারে গোপন নিষেধাজ্ঞা থাকায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবতকালের সংঘটিত ধর্ষণের কোনো ঘটনার বিচার হয়নি।

নেত্রীদ্বয় অবিলম্বে লম্পট শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খানকে বান্দরবানে বদলীর আদেশ প্রত্যাহারে করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও যথাযথ শাস্তির দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, মানিকগঞ্জ উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে সিংগাইর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীকে ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে মেসেজ পাঠিয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে। বিষয়টি বর্তমানে তদন্ত চলছে। তিনি নিজেও বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি গত ২৩ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে তাকে বান্দরবানে একই পদবীতে বদলি করা হয়েছে মর্মে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More