মে দিবসে র্যালি ও সমাবেশ করেছে সাভার প্রবাসী শ্রমজীবী ফ্রন্ট
ঢাকা: আজ মে দিবসে সমাবেশ ও র্যালি করেছে সাভার প্রবাসী শ্রমজীবী ফ্রন্ট।ঢাকায় প্রেসক্লাবে বিকেল ৩ টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সাভার প্রবাসী শ্রমজীবী ফ্রন্টের আহবায়ক সুখীময় চাকমার সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক কনক জ্যোতি চাকমার পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, ইউপিডিএফ সংগঠক মিল্টন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিনয়ন চাকমা, প্রবাসী শ্রমজীবী ফ্রন্টের সদস্য প্রমোদ চাকমা ও প্রকাশ চাকমা।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাপ্রশাসন মধ্যযুগীয় বর্বরতা প্রদর্শন করছে।এ বর্বরতার অংশ হিসেবে রমেল চাকমাকে হত্যা করা হয়েছে।গতকাল পিসিপি নেতা জুয়েল চাকমাকে এবং আজ নান্যাচরে রিপন আলো চাকমাকে গ্রেফতার করেছে ।
সমাবেশ থেকে বক্তারা রমেল চাকমার খুনী জোন কমান্ডার বাহালুল আলম, মেজর তানভীরসহ দোষী সেনাদের শাস্তির দাবি জানান।এছাড়া বক্তারা পিসিপি নেতা জুয়েল চাকমা ও রিপন আলো চাকমার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, মে দিবস সংগ্রামি ও প্রতিবাদের দিবস।এ দিবস শ্রমিকদের রক্তের মাধ্যমে অর্জিত। কিন্ত শাসকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে এ দিবসকে ভোতা করে দেয়ার জন্য আনন্দ উৎসবের দিনে পরিণত করেছে।
বক্তারা আরো বলেন, মে দিবস সকল নিপীড়িত মানুষের জন্য তাৎপর্য বহন করে। এদিবসে নিপীড়িত জাতি ও জনগণ মুক্তির দিশা খুজে পায়।
ফয়জুল হাকিম বলেন,পাকিস্তানী জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু স্বাধীনতার পর শাসকগোষ্ঠী পাকিস্তানী জাতিগত জাত্যভিমানী নীতিকেই অনুসরণ করেছে।
তিনি বলেন, এই রাষ্ট্র, সংবিধানে ও শাসকগোষ্ঠীর কাছে শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি ও নীপিড়িত জাতিসমূহের জীবনের কোন দাম নেই।একারণে এসমস্ত নিপীড়িত মানুষ প্রতিনিয়ত হত্যা-গুম-নিপীড়ণের শিকার হতে হয়।তিনি বলেন, শ্রমিকদের পুড়িয়ে, ভবন ধসে হত্যা করা হয়,দোষীদের কোন শাস্তি হয় না।
নিপীড়িত শ্রেণী ও জাতিসমূহের ঐক্যের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ঐক্যের মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তুলে, নিজেদের মুক্তি ছিনিয়ে আনতে হবে।
মিল্টন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত ভাবে দমনপীড়ন চলছে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে ১১ নির্দেশনা জারি করে নিপীড়ন আরো বৃদ্ধি করেছে। একের পর এক ধরপাকড়, নির্যাতন চালাচ্ছে সেনা প্রশাসন।পাহাড়ে কোন গণতান্ত্রিক অধিকার নেই, সেখানে সমাবেশ করে বাড়িতে ফিরতে পারব কি না তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিনয়ন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিষ্ঠুর বর্বর শাসন চলছে। এই শাসন ব্যবস্থা পাহাড়িদের প্রতিনিয়ত পিষ্ট হচ্ছে। রমেল চাকমাও এই নিষ্ঠুর শাসন ব্যবস্থায় বলি হয়েছে।
তিনি গতকাল পানছড়ি উপজেলা পিসিপি সভাপতি জুয়েল চাকমা গ্রেফতার ও শারিরীক নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে বলেন, সেনাপ্রশাসন পার্বত্য চট্টগ্রামে দমনপীড়নের মহোৎসবে মেতে ওঠেছে।দমনপীড়নে তারা কোন আইনকানুনের ধার ধারে না, অন্যায়ভাবে আটক ও নির্যাতন করে।
প্রবাসী শ্রমজীবী সভাপতি সুখীময় চাকমা বলেন, আমাদের শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন দেয়া হয় না।শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন না দেয়ার কারণে শ্রমিকদের জীবন চলে কষ্টের মধ্য দিয়ে। তিনি পাহাড়িদের প্রধান উৎসব বৈসাবিতে ৩ দিন ছুটি প্রদানের জন্য মালিক ও সরকারের কাছে দাবি জানান।তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যায় দমনপীড়ন বন্ধের দাবি জানান।
সমাবেশ শেষ হওয়ার পর র্যালি হয়। প্রেস ক্লাব থেকে পল্টন মোড়ে গিয়ে র্যালি শেষ হয়।
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।