রাঙামাটিতে এক কলেজ ছাত্র নিখোঁজ, অপহৃত হয়েছেন বলে ধারণা

0
আলোড়ন চাকমা। সংগৃহিত ছবি

রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

রাঙামাটি সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র আলোড়ন চাকমা (২৩) গত ৩ অক্টোবর ২০২৫ বিকাল থেকে নিঁখোজ রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন তার সহপাঠি ও পরিবারের লোকজন।

নিখোঁজ আলোড়ন চাকমার বাড়ি রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার পানছড়ির হাজাছড়ি গ্রামে। তার পিতার নাম প্রিয়ধন চাকমা ও মাতার নাম কল্পনা চাকমা।

পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, আলোড়ন চাকমা রাঙামাটি শহরের টিটিসি রোডের পিটিআই এলাকায় একজনের সাথে রুমমেট হিসেবে ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং তার রুমমেটের যাবতীয় কাজের সহযোগিতা করে পড়াশোনা করছিলেন। গত ৩ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক ৫:৪৫টার সময় বাজার করার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। এর পর থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি এবং এখনো পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে তার কোন খোঁজ পাচ্ছেন না।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ঐদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে কল্যাণপুরের এক দোকান থেকে কয়েকজন ছেলে আলোড়ন চাকমাকে ধরে জোর করে কল্যাণপুর মাঠে নিয়ে যেতে দেখেছেন। তবে তারা কারা তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

নিখোঁজ হওয়ার পর তার (আলোড়ন) পিতার মোবাইল নাম্বারে কল করে ১ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। যে নাম্বার থেকে কল করা হয় সেটি হলো-01878573775। তবে তিনি এত টাকা দেয়া তার পক্ষে সম্ভব নয় বলে তাদেরকে জানান।

এদিকে, বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে না পেরে গতকাল (৫ অক্টোবর) আলোড়ন চাকমার পিতা প্রিয়ধন চাকমা রাঙামাটি কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেন (যার নং- ২২২)। থানার ডিউটি অফিসার মো. আলী হোছাইন জিডিটি গ্রহণ করেন। 

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আলোড়ন চাকমার সর্বশেষ গতিবিধির লোকেশন ছিল রাঙামাটির শহরের কে.কে রায় সড়ক। তবে যে নাম্বার থেকে মুক্তিপণ হিসেবে ১ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছে সেটির লোকেশন ছিল চট্টগ্রামের মিরসরাই।

অপরদিকে, আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) বেলা আনুমানিক ২টার দিকে থানা থেকে পরিবারের লোকজনকে কল দিয়ে থানায় যেতে বলা হয়। এতে ভুক্তভোগীর পিতা প্রিয়ধন চাকমা থানায় গেলে ওসি মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন উল্টো তাকে ‘মিথ্যাভাবে জিডি করার’ অভিযোগ করে ধমক দেন এবং জেলে ঢুকিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে পূর্বের জিডি প্রত্যাহারপূর্বক থানা কর্তৃপক্ষের লেখা একটি কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। এছাড়া থানায় উপস্থিত থাকা আলোড়ন চাকমার রুমমেটকে তার ফেসবুকে দেওয়া ‘আলোড়ন চাকমা কল্যাণপুর এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া’ সংক্রান্ত একটি পোস্টও তাদের (পুলিশের) সামনে মুছে ফেলে তার বদলে “আলোড়ন চাকমা কল্যাণপুর থেকে নিখোঁজ হয়নি, কাউখালীর নিজ বাসা থেকে রাগ করে চলে যায়’ মর্মে আরেকটি পোস্ট দিতে বাধ্য করা হয়।

নিখোঁজের ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন বা নিখোঁজ ছাত্রের সন্ধান না করে কোতোয়ালি থানার ওসির নিখোঁজ ছাত্রের পিতাকে জিডি প্রত্যাহার করতে বাধ্য করার পিছনে কোন শক্তিশালী পক্ষের হাত রয়েছে কিনা তা নিয়ে সচেতন মহলে নানা সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

পরিবারের লোকজন ও এলাকার সচেতন মহল দ্রুত নিখোঁজ ছাত্র আলোড়ন চাকমার সন্ধান ও তাকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More