রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাক আগ্রাসন দিবসে আলোচনা সভা

রাঙামাটি প্রতিনিধি ।। “অস্তিত্ব রক্ষার্থে সংগঠিত হোন, আন্দোলন গড়ে তুলুন” এই আহ্বানে এবং “ ‘৪৭-এ ক্ষমতা হস্তান্তর, পার্বত্য চট্টগ্রাম’র ওপর অবিচার” এই শ্লোগানে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাক (পাকিস্তান) অগ্রাসনের ৭৪ বছর উপলক্ষে রাঙামাটিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২০ আগস্ট ২০২১ পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের উদ্যোগে রাঙামাটি সদর উপজেলা এলাকায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রাঙামাটি জেলা শাখার আহ্বায়ক ধর্মশিং চাকমার সভাপতিত্বে ও সতেজ চাকমার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক রাজেশ চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুনয়ন চাকমা, এলাকার চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গের প্রতিনিধি নীরু চাকমা ও বিপিন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তনুময় চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি সদর উপজেলা শাখার নেত্রী নিশি চাকমা।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট ভারত রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তার একদিন আগে জন্ম হয় পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের। ’৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন (১৮ জুলাই ‘৪৭ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গৃহীত) মোতাবেক দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলসমূহ নিয়ে পাকিস্তান এবং হিন্দু ও অমুসলিমদের নিয়ে ভারত রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার কথা। সে অনুসারে তৎকালীন জনসমিতির নেতা স্নেহ কুমার চাকমার নেতৃত্বে রাঙামাটিতে ভারতের পতাকা ও বোমাং রাজ পরিবারের নেতৃত্বে বার্মার পতাকা উত্তোলন করা হয়। ভারত পাকিস্তান বিভক্তির পর ১৭ আগষ্ট রেড ক্লিফের বিভাজন রেখা ও বাউন্ডারি কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের জুড়ে দিলে তার দু’দিন পর পাকিস্তানের বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা রাঙামাটি ও বান্দরবানে ভারত ও বার্মার পতাকা নামিয়ে দিয়ে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করে। যদিও সে সময় ৯৮.৫% অমুসলিম স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তানে যোগ দিতে চায়নি। কিন্তু তৎকালীন নেতৃত্ব পাকিস্তান দখলদারিত্ব মেনে নিতে না চাইলেও সে রকম কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি।
বক্তারা বলেন, যে জাতি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারে না সে জাতি কখনোই উন্নতি করতে পারে না। তাই ছাত্র ও যুব সমাজকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সঠিক ইতিহাস সম্বন্ধে জানার আহ্বান জানান।
বক্তারা আরো বলেন, ব্রিটিশ ও পাকিস্তানিরা পার্বত্য চট্টগ্রামে যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, বর্তমান সময়ে এসেও বাংলাদেশ সরকার জুম্ম জনগণের ওপর খুন, গুম, ধর্ষণ ও অন্যায়ভাবে আটক করে নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখল অব্যাহত রেখেছে। যা পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্বের সব আগ্রাসনকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি ছাত্র ও যুব সমাজকে মদ, জুয়া ও অনলাইন গেমে আসক্ত না হয়ে জাতির সংকটময় পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।