রাবি ও চট্টগ্রামে হামলার প্রতিবাদে চবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ

0


চবি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে নির্দোষ ঘোষণা করে বেকসুর খালাস দেয়ার প্রতিবাদে গত ২৭ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়(রাবি) ও ২৮ মে চট্টগ্রাম নগরীতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। পৃথক পৃথক এ হামলায় ছাত্র জোটের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। জামাত-শিবির ও তাদের অনুসারী লোকজন এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  

উক্ত হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে ২০২৫) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শহীর মিনার প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সংগঠক আহমেদ মুগ্ধ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন-এর সংগঠক মাহিদুল ইসলাম ইবাদ ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া।


আহমেদ মুগ্ধ বলেন, “একজন চিহ্নিত রাজাকার নির্দোষ বা বেকসুর খালাস হতে পারে না। কিন্তু আদালত তাকে বেকসুর খালাস দিয়ে প্রমাণ করলো রাজনৈতিক প্রভাবেই বিচারকার্য হয়েছে। আমরা বিচারব্যবস্থায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছি৷ এই গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে জামাত ও শিবিরের হামলা তাদের স্বৈরাচারী চরিত্রকে উন্মোচন করেছে। অতীতে অসংখ্যবার বামপন্থীরা দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে রাজপথে নেমেছে, মার খেয়েছে। তখন শিবির ছাত্রলীগের লুঙ্গির নিচে লুকিয়ে ছিলো। আজ তারা আবারো প্রমাণ করেছে ছাত্রলীগ আর শিবির আলাদা কিছু না, বরং একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।”

সুদর্শন চাকমা বলেন, “গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করার যে কায়দা জামাত শিবির দেখালো, তা ছাত্রলীগেরই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পুনরাবৃত্তি। রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণকে দীর্ঘদিন ধরে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। পাহাড়েও সন্ত্রাসী কায়দায় রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও স্থানীয় জনবিরোধী শক্তিগুলো গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে। রাষ্ট্রের প্রশ্রয় না পেলে তা সম্ভব হতো না। ফলে আমরা রাবিতে ও চট্টগ্রাম নগরে যে নৃশংস হামলা হলো জামাত শিবিরের দ্বারা, সেই হামলার বিচার চাই। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দৃশ্যমান রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ চাই।”

মাহিদুল ইসলাম ইবাদ বলেন, “জামায়াত ও শিবিরের লোকেরা আমাদের ভারতের দালাল বা হাসিনার দালাল বলে নিপীড়ন চালাতে চায়। কিন্তু যখন তারা যখন ভারতে অবস্থানরত ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনার বদলে ক্ষমা করে দেয়, তখন প্রমাণিত হয়, আসলে প্রকৃত দালাল কারা, প্রকৃত হাসিনার দালাল কারা। অতীতে ছাত্র লীগ নানা ট্যাগ লাগিয়ে দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। তখন শিবির ছাত্রলীগের ভিতরে থেকে আমাদের উপর হামলার অংশীদার ছিলো৷ ফলে ট্যাগ দিয়ে হামলার ন্যায্যতা আদায় করে মূলত শিবির ও জামাত তাদের আওয়ামী লীগ পূর্ববর্তী চরিত্রকেই ফিরিয়ে এনেছে।”


ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, ২৪’র অভ্যুত্থানের পর এমন হামলার সংস্কৃতি ফিরে না আসুক এটাই আমাদের চাওয়া ছিলো। কিন্তু শিবির ও জামাত আমাদের ওপর হামলা চালয়ে ২৪’র শহীদদের আত্মত্যাগকে কলঙ্কিত করেছে। রাজাকার আজহার একাত্তরের চিহ্নিত ও প্রমাণিত আসামী। তার দ্বারা ধর্ষিত বীরাঙ্গনা মনসুরা বেগম তার ফাঁসির রায়ে খুশি হয়েছিলো। এখন ফাঁসির রায় আজকের যুগে গ্রহণযোগ্য কি না, সেটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু একজন প্রমাণিত রাজাকারকে কীভাবে নির্দোষ বলা যায়?

তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, হাসিনার আমলের যুদ্ধাপরাধের বিচারের পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সেই ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতিতেই আজহারের বেকসুর খালাস হলো৷ এই ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতিতেই হাসিনাকেও নির্দোষ প্রমাণ করার সুযোগ আছে৷ ফলে বিচারের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা বাঞ্চনীয়।

তিনি জামাত-শিবির তাদের সন্ত্রাসী চরিত্রকে উন্মোচন করেছে মন্তব্য করে সারাদেশের মানুষকে এদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More