রামগড়ে পাহাড়িদের ঘরবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে কুদুকছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ
কুদুকছড়ি (রাঙামাটি): রামগড়ে সেটলার কর্তৃক বিনা উস্কানিতে সোনাইআগা, তালতলী ও ব্রতচন্দ্র পাড়ায় পাহাড়িদের ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে আজ শনিবার (১ জুলাই ২০১৭) রাঙামাটির কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম রাঙ্গামাটি জেলা শাখা।
মিছিলটি দুপুর ২টায় বড় মহাপুরুম উচ্চ বিদ্যালয় গেইট হতে শুরু হয়ে কুদুকছড়ি বাজার প্রদক্ষিণ করে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রাঙ্গামাটি জেলা আহ্বায়ক ধর্মশিং চাকমা সভাপতিত্বে ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙমাটি জেলা সহ-সভাপতি নিকন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি জেলা শাখা সহ-সাধারণ সম্পাদক দয়াসোনা চাকমা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি কুনেন্টু চাকমা।
সমাবেশে দয়াসেনা চাকমা বলেন, গত ৩০ জুন রাত ১০ টায় সেটলাররা রামগড় থানার সোনাইআগা, তালতলী ও ব্রতচন্দ্র পাড়ায় পাহাড়িদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। প্রশাসন ঘটনার জড়িত সেটলার বাঙালিদের গ্রেফতার না করে উল্টো তাদের পক্ষে নিয়েছে। তারা রমেলকে হত্যা করলো সেটা ধামাচাপা দেয়ার জন্য লংগদুতে অগ্নিসংযোগ করলো। আর সেটার রেশ কাটতে না কাটতে গতকাল রামগড়ে পাহাড়ি গ্রামে হামলা চালানো হলো। তিনি বর্তমান সরকার-প্রশাসনের ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমকে তীব্র নিন্দা জানান।
ধর্মশিং চাকমা বলেন, পাহাড়ি জাতিসত্তাদের অস্তিত্ব ধ্বংস করার জন্য সরকার নিজ পাহাড়িদের নিজ বাস্তুভিতা থেকে উচ্ছেদ করতে নানা পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত সেনা-সেটলার-প্রশাসন কর্তৃক পাহাড়িদের ভূমি বেদখল হচ্ছে, তাদের কর্তৃক পাহাড়ি নারী ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হচ্ছে। এসব ঘটনায় নিরীহ পাহাড়ি জনগণ সুষ্ঠু বিচার পাচ্ছে না। প্রশাসন অপরাধীদের গ্রেফতার করছে না। গত ৩০ জুন লংগদু জোন থেকে যৌথবাহিনীর একটি দল গলাছড়িতে ঘরবাড়ি তল্লাশী চালিয়েছে। সেখানে ৪০ বছরে এক বৃদ্ধকে চোখ, মুখ, হাত পা বেঁধে নির্যাতন চালিয়েছে।
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার রাষ্ট্রীয় বাহিনীরশোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন জোরদার করার জন্য আহ্বান জানান।
সমাবেশে কুনেন্টু চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের এসব সমস্যার জন্য সরকারকে দায়ি করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ৪লক্ষ বাঙালি অনুপ্রবেশ করায় আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম অশান্ত। পুরো পাহাড়ি জাতি বিলুপ্তির পথে। তিনি জাতির এই দুর্দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল ছাত্র সমাজকে এক হয়ে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা রামগড়ে সেটলার কর্তৃক তিন পাহাড়ি গ্রামে হামলার মূল হোতা বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধি মোঃ হোসাইন, নূরনবী, জসীম ও মিন্টু কোম্পানিসহ ঘটনার সাথে জড়িত সেটলার বাঙালিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।