রামগড়ে পাহাড়ি গ্রামে হামলা, ভাঙচুরের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ
খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ি জেলাধীন রামগড় সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সোনাইআগা, তালতলি পাড়া ও ব্রত চন্দ্র কার্বারী পাড়ায় সেটলার কর্তৃক তিন পাহাড়ি গ্রামে হামলা ও ঘরবাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চ্ট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
আজ শনিবার (১ জুলাই ২০১৭) দুপুর ১টায় খাগড়াছড়ি জেলা সদর নারাঙহিয়া রেড স্কোয়ার থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি স্বনির্ভর বাজার বটতলায় গিয়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রেশমি মারমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা শাখার সদস্য অতুল বিকাশ চাকমা।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় কালাডেবার উগ্রসাম্প্রদায়িক সেটলাররা বিনা উস্কানিতে সোনাইআগা, তালতলি ও ব্রত চন্দ্র কার্বারী পাড়ায় নিরীহ পাহাড়িদের তিনটি গ্রামে দুইটি দোকানসহ ১১টির অধিক বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। সেটলাররা আজ সকাল ১০.৩০টার দিকে নবম শ্রেণী পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ইতিহাসে অতীতে সেটলার, সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রীয় সকল বাহিনী কর্তৃক পাহাড়িদের উপর গণহত্যা, হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভূমি বেদখল ও নারী নির্যাতনের মত ঘটনা ঘটেছিল। অতীতে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান না করায় এই রকম ঘটনা বার বার ঘটে চলেছে।
তারা আরো বলেন, কয়েক মাস আগে দুষ্কৃতকারী সেনা কর্মকর্তারা পিসিপি নেতা রমেল চাকমাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে, গত ২ জুন সেনা-পুলিশের সহায়তায় সেটলাররা লংগুদুতে পাহাড়ি গ্রামে অগ্নিসংযোগ করেছে। কিন্তু এদেশে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন এসব ঘটনার কোন বিচার করেনি, অপরাধীদের শাস্তি দেয়নি। সরকার সেনা-প্রশাসনের মধ্যে সম্প্রদায়িক নীতি ও পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকার কারণে রামগড়ে সেটলারা বাঙালিরা পাহাড়িদের গ্রামে হামলা চালানোর সুযোগ পেয়েছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা রামগড়ে সেটলার কর্তৃক তিন পাহাড়ি গ্রামে হামলার মূল হোতা বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধি মোঃ হোসাইন, নূরনবী, জসীম ও মিন্টু কোম্পানিসহ ঘটনার সাথে জড়িত সেটলার বাঙালিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সেটলার কর্তৃক ভবিষ্যতে ঐ এলাকায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটবেনা এমন নিশ্চয়তা প্রদান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।
—————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।