রামগড়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও ফেনী নদীতে ফুল অর্পণ করে বৈ-সা-বি উৎসবে সূচনা

0


রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০২৪

খাগড়াছড়ির রামগড়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও ফেনী নদীতে ফুল অর্পণের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈ-সা-বি (বৈসু, সাংগ্রাই, বিঝু…) শুরু হয়েছে।

 আজ শুক্রবার (১২ এপ্রিল ২০২৪) সকাল ১১টায় রামগড় উপজেলা এলাকাবাসীর উদ্যোগে উক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে স্ব স্ব জাতীয় পোশাক পরে বিভিন্ন এলাকা থেকে কিশোর-কিশোরীসহ  শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।


“আসুন, উৎসবে ঐক্যবদ্ধ হই, ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব রক্ষার্থে সুদৃঢ় করি ভ্রাতৃত্বের বন্ধন” শ্লোগানে রামগড় উপজেলা সদরের মন্দির ঘাট এলাকা থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফেনী নদীর মহামুনি ঘাটে যায়। এরপর সেখানে পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের প্রথা অনুসারে নদীতে অর্পণ করে পুরাতন বছরের দুঃখ-গ্লানি মুছে গিয়ে নতুন বছরে সকলের মঙ্গল কামনা করা হয়।

ফুল অর্পণের পর রামগড় উপজেলা বৈ-সা-বি উদযাপন কমিটির সভাপতি ধনঞ্জয় ত্রিপুরা সভাপতিত্বে ও রামগড় সরকারি কলেজের ছাত্র তৈমাং ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- মহিলা মেম্বার চেইওয়া চৌধুরী, গুলমনি চাকমা ও বিশিষ্ট মুরুব্বি কংজ মারমা।

বক্তারা বলেন, নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের ঐতিহ্যবাহী বৈ-সা-বি উৎসব উদযাপন হতে যাচ্ছে। চাকমাদের কাছে এ উৎসবটি বিঝু, মারমাদের কাছে সাংগ্রাই আর ত্রিপুরাদের কাছে বৈসু নামে পরিচিত। উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রায় চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরার জাতিসত্তারা নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে নিজেদের ঐতিহ্য ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছে। নিজেদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।

তারা আরো বলেন, পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের কাছে এই উৎসবটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই উৎসবটি পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপদে নির্বিঘ্নে পালন করার কোন পরিবেশ নেই। কিছুদিন আগে বান্দরবানে বম সম্প্রদায়ের নিরীহ জনগণকে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক নির্বিচারে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানসহ সব জায়গায় প্রতিক্রিয়াশীলদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। নারী নির্যাতন ও ভূমি বেদখলসহ যেকোন অপরাধে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। একটা উৎসব পালন করতে গেলে নিরাপদ ও ভয়ভীতি হীন পরিবেশের দরকার। আমরা চাই উৎসব পালন করার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ।

বক্তারা সকলের মাঝে বৈষম্য দূর ও পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের মাঝে সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় করার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, বৈসাবি উপলক্ষে রামগড়ে বিভিন্ন ধরনের খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More