লংগদুতে পিসিপি’র উদ্যোগে লংগদু গণহত্যা দিবসে আলোচনা সভা

0

লংগদু প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩

রাঙামাটির লংগদুতে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে লংগদু গণহত্যা’র ৩৪ বছর উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ ৪ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার সময় “পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় বাহিনী-সেটলার কর্তৃক পাহাড়িদের উপর সংঘটিত সকল গণহত্যার শ্বেতপত্র প্রকাশ কর এবং লংগদু গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিচার করতে হবে” এই দাবি সম্বলিত শ্লোগানে উক্ত সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় পিসিপি’র রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিপন চাকমার সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক ঝিমিত চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের লংগদু ইউনিটের সংগঠক নিবিড় চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রাঙামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়তন চাকমা ও উত্তর বড়কলক এলাকার যুব সমাজের প্রতিনিধি রিপন জ্যোতি চাকমা।

নিবিড় চাকমা বলেন, ১৯৮৯ সালে লংগদু গণহত্যাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবত ডজনের অধিক গণহত্যা ছাড়াও আরো অন্তত দুই ডজনখানিক সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ওপর এমন বর্বর হত্যাযজ্ঞ ও হামলা চালানোর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এ অঞ্চলে বসবাসকারী পহাাড়িদের অস্তিত্ব ধ্বংস করে দেওয়া।

তিনি আরো বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত অন্যায় ধরপাকড়, খুন, নিপীড়ন-নির্যাতন ভূমি বেদখল করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জিইয়ে রাখতে নানা অপকৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে।

তিনি সরকারের পাতানো ফাঁদ থেকে বেরিয়ে এসে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করে শাসকগোষ্ঠির অন্যায়-অত্যাচরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সামিল হতে জেএসএস সহ সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

যুব নেতা প্রিয়তন চাকমা বলেন, সম্প্রতি বান্দরবানে বম জাতিসত্তার ৮ জনকে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনাই প্রমাণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে শাসকগোষ্ঠি কি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি জিইয়ে রেখেছে।

তিনি শাসকগোষ্ঠির অন্যায়-অবিচার ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে যুব সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান এবং লংগদু গণহত্যা ও বান্দরবানে ৮ বম হত্যার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করেন।

সভার সভাপতি রিপন চাকমা বলেন, ১৯৮৯ সালের আজকের এই দিনে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় বিনা উস্কানিতে পাহাড়িদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। দীর্ঘ ৩৪ বছর অতিক্রান্ত হলেও এই গণহত্যার কোন বিচার হয়নি। শুধু তাই নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবত সংঘটিত ডজনের অধিক গণহত্যার সাথে জড়িত সেনা-সেটলারদের আইনের আওতায় আনা হয়ীন। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বার বার পাহাড়িদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা ঘটেই চলেছে। ২০১৭ সালের ২ জুন এই লংগদুতে আবারো সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হয়েছিল। এতে পাহাড়িদের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

বিচারহীনতার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সেটলাররা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা সুযোগ পেলেই পাহাড়িদের উপর হামলে পড়ছে, ভূমি কেড়ে নিচ্ছে, নারীদের উপর অত্যাচার করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তিনি আর কালক্ষেপণ না করে লংগদু গণহত্যাসহ এ যাবত সংঘটিত সকল গণহত্যার শ্বেতপত্র প্রকাশ করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More