লক্ষীছড়িতে কলেজ ভবন নির্মাণের নামে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চলছে পাহাড় কাটা

0

লক্ষীছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষীছড়িতে কলেজ ভবন নির্মাণের নামে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ব্যাপক পাহাড় কাটা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উন্নয়ন পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন ও ঐ দপ্তরের প্রকৌশলী কলেজ পরিদর্শনকালে কলেজটি অন্য জায়গায় স্থানান্তরের কথা বলেছেন। এতে কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পাহাড় কেটে কলেজটি করার কথা বলা হলে তিনি এক টুকরো মাটিও না কাটার পরামর্শ দেন। অন্যদিকে উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলীও উক্ত স্থানে পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।Laxmichari pahar kata

কিন্তু কে শুনে কার কথা! বর্তমানে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পাহাড় কেটে জেলা পরিষদের অর্ধকোটি টাকার একটি ভবন নির্মাণ করার কাজ চলছে।

এ বিষয়ে লক্ষীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা বলেন, দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা কলেজটি চালুর জন্য নানা সুবিধার কথা বলে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। এতে অন্যতম শর্ত ছিল কলেজকে একটি সুন্দর জায়গায় স্থানান্তর করা। কারণ সুউচ্চ পাহাড়ের উপর কলেজটি হওয়ায় অন্য উপজেলা থেকে এমনকি স্থানীয়রাও কলেজে ভর্তি হতে চায় না।

এদিকে লক্ষীছড়ি উপজেলার সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ কলেজকে সমতল জায়গায় স্থানান্তর করার লক্ষ্যে হাসপাতাল এলাকায় একটি জায়গা চিহ্নিত করেন। কিন্তু এতে বাধ সাধে সেনাবাহিনী। সেখানে কলেজটি স্থাপন করা হলে পাহাড়িদের দখলে যাবে, পিসিপি’র কর্মকাণ্ডের মাত্রা বাড়বে ইত্যাদি সাম্প্রদায়িক অজুহাত সৃষ্টি করে তারা। পাহাড় কাটার ক্ষতিকর দিক জানা সত্ত্বেও পাহাড়ের মাটিকাটাসহ সকল কাজ তত্ত্বাবধান করছে সেনাবাহিনী। পাহাড় কাটা বিষয়ে ইউএনও’র তদারকির দায়িত্ব থাকলেও তিনি নিরব ভূমিকা পালন করছেন।

সম্পতি রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে দেড় শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। লক্ষীছড়ির বেশ কিছু জায়গায়ও পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড় ধসের পিছনে পাহাড় কাটা ও অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণকে দায়ী করেছেন পরিবেশবিদরা।

যেভাবে পাহাড় কেটে কলেজ ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে এতে ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তারা সম্প্রতি রাঙামাটিসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অবিলম্বে পাহাড় কাটা বন্ধ করে কলেজটি অন্যত্র সমতল জায়গায় স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন।
—————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More