লক্ষ্মীছড়িতে থামছে না বোরকা পার্টির সন্ত্রাসী কর্মকান্ড
সিএইচটিনিউজ.কম
লক্ষ্মীছড়ি(খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়িতে সেনা মদদপুষ্ট বোরকা পার্টির সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কিছুতেই থামছে না। সেনা-প্রশাসনের সহযোগিতায় সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি সহ নানা অপকর্ম সংঘটিত করে যাচ্ছে। এখানে বোরকা পার্টি কর্তৃক সাম্প্রতিক কিছু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হলো:
গত ১০ অক্টোবর ধীমান চাকমার নেতৃত্বে বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা সেনা ও পুলিশকে সাথে নিয়ে লক্ষীছড়ি উপজেলা সদরের বনবিহারে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী পুণ্যার্থীদের পথরোধ করে তল্লাশি চালিয়ে অহেতুক বাধা প্রদান করা হয়।
এর আগে গত ২ অক্টোবর বোরকা পার্টি সন্ত্রাসীদের যোগসাজশে গোয়েইছড়ি সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শহীদ রুইখই মারমার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে অংশগ্রহণ করতে আসা লোকজনকে দুল্যাতলী ক্যাম্পের চেক পোষ্টে বাধা প্রদান করে। এ সময় প্রদীপ চাকমা(৩০) পিং- থুত্ত্যা চাকমা, গ্রাম: বরদোনা, সোনাইয়া চাকমা(২২) পিং- নির্মল চাকমা, গ্রাম: দেওয়ান পাড়া, জগত্যা চাকমা(২২) পিং- মৃত কান্দুজ্যা চাকমা, গ্রাম: কৈলাশ মহাজন পাড়া উক্ত তিনজনই সেনা কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হন। একই দিন কতুকছড়ি, বিনাজুরি, বড়তলী ও লক্ষ্মীছড়ি পশ্চিম দক্ষিণ দিক থেকে দুইটি জীপ গাড়ি নিয়ে আসা লোকজনকে বাধা প্রদান করে এবং গাড়ীর চালককে বেধড়ক মারধর করে।
এছাড়া গত ১ অক্টোবর ওয়াকছড়ি, ভোলাছলা, ডেবাতলী, দাজ্যাপাড়া এলাকা থেকে শহীদ রুইখই মারমার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী অনুষ্ঠানে আগাম অংশগ্রহণ করতে আসা লোকদের লক্ষ্মীছড়ি বাজারে সেনা সহযোগীতায় ধীমান চাকমার নেতৃত্বে বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা বাধা প্রদান করে এবং সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করলে রাতে তারা নিজ নিজ জায়গায় ফিরে যেতে বাধ্য হন। ।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, ২ অক্টোবরের থেকে বোরকা পার্টির সন্ত্রাসী ধীমান চাকমা ও শ্যামল কান্তি চাকমা লক্ষীছড়ি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অংগ্য প্রু মারমা ও মহিলা ভাইস চেয়রাম্যান বেবী রাণী বসু, ১নং লক্ষীছড়ি ইউপি চেয়রাম্যান রাজেন্দ্র চাকমা, একই ইউপির ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার মেরিনা চাকমা, দুল্যাতলী ইউপি ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার নিসাই প্রু মারমা, একই ইউপির ৭,৮,৯ নয় ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার রত্না চাকমাকে প্রাণনাশের হুমকী প্রদান করে যাচ্ছে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি, ভিজিএফ এর কার্ড ও ঈদ উপলক্ষে ভিজিডি-ভিজিএফ কার্ডের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের হুমকী প্রদানের ফলে জনগণকে না দিয়ে তাদেরকে কার্ড বরাদ্দ দিতে বাধ্য হয় চেয়ারম্যান-মেম্বাররা।
এছাড়াও গত ১১ আগস্ট জ্যোতিশ চাকমা, পিতা- নতুন সেন চাকমা গ্রাম: রান্যামাছড়া-এর নেতৃত্বে বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা সেনা পিকআপে করে কলাছড়ি এলাকায় গিয়ে বড় পেদা চাকমা(৩৫) পিতা-ধুইল্যা চাকমা, গ্রাম-কলাছড়ি, গুরিঙ্যা চাকমা(৫০), পিতা- বালিধন চাকমা গ্রাম:কলাছড়ি-কে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা লক্ষ্মীছড়ি বাজারের সাপ্তাহিক হাটবারের দিন রবিবার ও বুধবার নিয়মিত বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা আদায় করলেও সেনা-প্রশাসন এসব দেখেও না দেখার ভাণ করে থাকে।
অপরদিকে, লক্ষীছড়ি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের ছাদের উপর সেনা চেকপোষ্ট বসিয়ে বোরকা পার্টি সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ছাত্রবাসের দ্বিতীয় তলায় বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীরা নিরাপদে প্রতিদিন রাতযাপন করে থাকে। সেনাবাহিনীর এহেন সহযোগীতার কারণে সন্ত্রাসীদের অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকার জনগণ টু শব্দটিও করার সাহস পাচ্ছে না।
লক্ষ্মীছড়ি এলাকার সর্বস্তরের জনগণ বোরকা পার্টির সন্ত্রাসীদের সেনা মদদদান বন্ধ করে তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
—————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।