লামায় ক্ষতিগ্রস্ত রেংয়েন কার্বারি পাড়া পরিদর্শন করলেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান

0

বান্দরবান প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩

ক্ষতিগ্রস্ত ম্রোদের সাথে কথা বলছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত রেংয়েন ম্রো কার্বারি পাড়া পরিদর্শন করেছেন। আজ মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি ২০২৩) বিকাল সাড়ে ৪টার সময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সদস্যরা রেংয়েন ম্রো কার্বারি পাড়ায় পৌঁছেন। আজ সকালে তারা খাগড়াছড়ি থেকে বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

পরিদর্শনকালে কমিশনের চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সাথে কথাবার্তা বলেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তরা গত ১ জানুয়ারি ২০২৩ দিবাগত গভীর রাতে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ’র লেলিয়ে দেওয়া দুর্বৃত্ত কর্তৃক সংঘটিত হামলা, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে ঘটনা ও রাবার কোম্পানি কর্তৃক ভূমি বেদখলের বিস্তারিত কমিশনকে জানান। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে রংধজন ত্রিপরা লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ তথা ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়ে কমিশনকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান গ্রামবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের কথা শুনলাম। এখানে যারা আক্রান্ত হয়েছেন, এর কারণে যথেষ্ট কষ্ট পেয়েছেন, শারীরিক কষ্ট, মানসিক কষ্ট ও লুটপাটের শিকার হয়েছেন তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে সমবেদনা জানাচ্ছি’।

কথা বলছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ

তিনি আরো বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে, ‘আমরা যারা বাংলাদেশের নাগরিক আমাদের প্রত্যেকের অধিকার আছে নিজের বাড়িতে, নিজের ঘরে থাকার। অন্যায়ভাবে কেউ কাউকে উৎখাতও করতে পারে না, মারতেও পারে না, কোন রকম লুটপাটও করতে পারে না’।

ঘটনাটি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘গত বছর ১৬ এপ্রিল যখন প্রথম আগুন লাগানো হয় তখনি আমরা এটা নিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করি। কিছু তথ্য ঘাটতি থাকায় আমরা তথ্য সংগ্রহের চেষ্টায় ছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে দুর্ভাগ্যক্রমে ১ জানুয়ারি রাতে ঘটনাটা ঘটলো। এর জন্য আমরা নিজেরা অত্যন্ত দুঃখিত’।

তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘অন্যায়কারী কখনো প্রশ্রয় পাবে না। যারা অন্যায় করেছে তাাদের বিষয়ে জেনে নেয়া হবে। আমি বিশ্বাস করি তারা এ থেকে রেহাই পাবে না। আপনারা যারা প্রকৃত এ জায়গার মালিক তাাদের অধিকার থাকবে। আমরা মনে করি এটা সঠিক। আমরা সরকারি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আপনাদের অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা করবো’।

ঘটনাটি নিয়ে এটি মানবাধিকার কমিশনের দ্বিতীয় দফা পরির্দশন। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিল।

গত ১ জনুয়ারি দিবাগত মধ্যরাতে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ’র লেলিয়ে দেয়া দুর্বৃত্তরা ম্রোদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর চালায়। ফাইল ছবি

উল্লেখ্য, গত ১ জনুয়ারি ২০২৩ দিবাগত মধ্যরাত ১:০০টার সময় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ’র লেলিয়ে দেয়া দুর্বৃত্তরা রেংয়েন ম্রো পাড়ায় হামলা, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। তারা ম্রোদের তিনটি ঘর পুড়িয়ে দেয় ও ৬টি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

মূলত গত বছর এপ্রিল থেকে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি মৌজায় ম্রো ও ত্রিপুরাদের তিন পাড়াবাসীর ভোগদখলীয় ৪০০ একর জমি জবরদখলের চেষ্টা শুরু করে। তারা জুমভূমি, বাগান-বাগিচা পুড়ে দেয়া, হামলা-মামলা, খাবার পানির উৎসে বিষ প্রয়োগ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, ফসল লুট ও কলা বাগান কেটে দেয়াসহ নানা অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ম্রো ও ত্রিপুরা পাড়াবাসীরা প্রশাসন থেকে কোন প্রতিকার পাচ্ছে না।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More