লোগাং পদযাত্রার স্মারকচিহ্ন ‘কড়ই গাছটি’ কেটে ফেলেছে খাগড়াছড়ি কলেজ কর্তৃপক্ষ

ঐতিহাসিক লোগাং পদযাত্রার স্মারকচিহ্ন ’কড়ই গাছটি’ কেটে ফেলেছে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪
পার্বত্য চট্টগ্রামে ঐতিহাসিক লোগাং পদযাত্রার স্মারকচিহ্ন ’কড়ই গাছটি’ কেটে ফেলেছে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত ৯ জুলাই ২০২৪ কড়ই গাছটি কেটে ফেলা হয় বলে জানা গেছে।
লোগাং গণহত্যার প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লোগাং পদযাত্রার জন্য ১৯৯২ সালের ২৮ এপ্রিল সেই কড়ই গাছটির তলায় জমায়েত হয়েছিল হাজার হাজার জনতা। সেখান থেকেই লোগাং অভিমুখে শুরু হয়েছিল ঐতিহাসিক পদযাত্রা। যার কারণে স্থানটি ‘কড়ইতলা’ নামে পরিচিতি লাভ করে।

কেটে ফেলার আগে কড়েই গাছটি

গাছটি কেটে টুকরো টুকরো করে রাখা হয়েছে।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে আয়োজিত উক্ত পদযাত্রায় তৎকালীন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়েছিলেন।
জানা গেছে, এর আগে ২০১৩-১৪ সালের দিকে তৎকালীন সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মো. আব্দুল লতিফ-এর সময়ে একবার কড়ই গাছটি কেটে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সে সময় পিসিপি’র যুক্তিসঙ্গত প্রতিবাদের কারণে গাছটি কাটতে পারেনি। কিন্তু এবার সেই গাছটিকে কেটে ফেলা হলো।

লোগাং পদযাত্রার আগ মুহুর্ত। অতিথিদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে। ২৮ এপ্রিল ১৯৯২। ছবি: কড়ই গাছ তলা, খাগড়াছড়ি কলেজ। ফাইল ছবি
ছবিতে বাম থেকে শিশির মোড়ল (কাঁধে ক্যামেরা ঝুলানো, ভোরের কাগজের রিপোর্টার), রুহিন হোসেন প্রিন্স (বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি), আব্দুল্লাহ সরকার (প্রয়াত, তৎকালীন বাসদ কেন্দ্রীয় নেতা), রওশন আরা রুশো (বাসদ মহিলা ফ্রন্টের নেত্রী), বাসদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, নুর আহম্মদ বকুল (গণতান্ত্রিক ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি), আসলাম খান, উদয় পাল (বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি), বেলাল হোসেন (সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি), ধীরাজ চাকমা (পিসিপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক), প্রসিত খীসা (তৎকালীন পিসিপি’র সভাপতি), বোধিপ্রিয় চাকমা (খাগড়াছড়ি পিসিপি জেলা সভাপতি, স্ট্রোকে প্রয়াত), বিশ্বজিৎ চাকমা (পিসিপি’র সাবেক সভাপতি) ও ক্যামেরা হাতে এক সাংবাদিক।

ঐতিহাসিক লোগাং পদযাত্রা শুরুর দিকে, ২৮ এপ্রিল ১৯৯২, কড়ইতলা, খাগড়াছড়ি। ফাইল ছবি
ঐতিহাসিক লোগাং পদযাত্রার স্মারকচিহ্ন ‘কড়ই গাছটি’ কেটে ফেলার ঘটনাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সঠিক ও সংগ্রামী ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন পিসিপিসহ সচেতন ছাত্র সমাজের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন নতুন প্রজন্মকে সঠিক ও সংগ্রামী ইতিহাস ভুলিয়ে রেখে সংগ্রাম বিমুখ করে রাখতে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঐতিহাসিক বহু জায়গার নাম পরিবর্তন করে গৌরবময় অতীত মুছে ফেলার হীন প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।