শহীদ বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিন’র স্মরণে কুদুকছড়িতে প্রদীপ প্রজ্বলন ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী

0


রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

শহীদ বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিন’র স্মরণে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে প্রদীপ প্রজ্বলন ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), রাঙামাটি জেলা শাখা।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকাল সাড়ে ৩টায় ‘রাষ্ট্রীয় মদদে সেনাসৃষ্ট ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসী কর্তৃক শহীদ বিপুলসহ ৪ জনের হত্যাকাণ্ডের ২ বছর’ উপলক্ষে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।


‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের বিচার কর’ এই ব্যানার শ্লোগানে আয়োজিত উক্ত কর্মসূচিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি চয়ন চাকমার সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক পলেন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক শান্ত চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রিতা চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুবফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ধর্ম সিং চাকমা।

ছাত্র নেতা চয়ন চাকমা বলেন, বিপুলদের মৃত্যু হয় না। ঘাতকরা তাদের জীবন শেষ করে দিতে পারলেও তাদের বিপ্লবী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে পাহাড়ে শত-শত বিপুলের জন্ম হবে। তাদের আত্মত্যাগ, তাদের বিপ্লবী চেতনা, তাদের জুম্ম জাতির মুক্তির স্বপ্ন নতুন প্রজন্মকে আন্দোলনকে সামিল হতে আরো উৎসাহিত করবে এবং আন্দোলন আরো ত্বরাম্বিত হবে।

তিনি শহীদ বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানান।

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী রিতা চাকমা বলেন, ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর বিপুলদা’দের সাথে  সাংগঠনিক কাজ করতে পানছড়ি অনিল পাড়ায় ছিলাম। সেদিন রাত ৯-১০টা দিকে সেনাবাহিনীর মদদে নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীরা গণতান্ত্রিক যুব ফোরামে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা,  গণতান্ত্রিক যুবফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সহ-সভাপতি লিটন চাকমা ও ইউপিডিএফ সদস্য রুহিন বিকাশ ত্রিপুরাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে বিপুলদা’দের হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা আজো প্রকাশ্য ঘুরে বেড়ায়। প্রশাসন হত্যাকারীদের গ্রেফতার না করায় হত্যাকারীরা বার বার অপরাধমূলক কাজ করতে উৎসাহ পাচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচার ও শাস্তির দাবি জানান।


ছাত্রনেতা শান্ত চাকমা বলেন, আজকের দিনে আমরা শুধু বিপুল চাকমাদের হারায়নি, হারিয়েছি জাতির নক্ষত্র। পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্মদের যাতে অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা যায় সেই জন্য তরুণ রাজনৈতিক নেতাদের  বাছাই করে হত্যা করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে, নিজের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে জাতির জন্য তাদের আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। হয়তো হায়েনারা বিপুলদের হত্যা করতে পেরেছে, কিন্তু তারা বিপুলদের বিপ্লবী চেতনাকে হত্যা করতে পারেনি।

তিনি অবিলম্বে বিপুলসহ চার তরুণ নেতা হত্যায় জড়িত ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান।

যুবনেতা ধর্মশিং চাকমা বলেন, শহীদ বিপুল, সুনীল, লিটন, রুহিন বিকাশরা অধিকারের জন্য আন্দোলন করতে শহীদ হয়েছেন। তারা চুরি, ডাকাতি করতে শহীদ হননি। বিপুল চাকমা ছাত্র রাজনীতি শেষ করে যুব ফোরামে যোগ দেন এবং নিপীড়িত মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন তাদের আত্মত্যাগের কথা আমরা ভুলবো না।

আলোচনা শেষে শহীদ বিপুলদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়।




This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More