শিক্ষা দিবস উপলক্ষে রাঙামাটির সাপছড়িতে পিসিপি’র আলোচনা সভা

রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিক্ষা দিবস উপলক্ষে রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়িতে আলোচনা সভা করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), রাঙামাটি জেলা শাখা।
আজ (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪), মঙ্গলবার বেলা ২ টার সময় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)’র রাঙামাটি জেলা সভাপতি তনুময় চাকমা ও সঞ্চালনা করেন জেলা সাধারণ সম্পাদক বারিঝে চাকমা। এতে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা সভাপতি রিপনা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ধর্মশিং চাকমা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, ইউপিডিএফ সংগঠক নির্মল খীসা।
সভাপতির বক্তব্যে তনুময় চাকমা বলেন, ’৬২ সালে বানিজ্যমুখী শরিফ শিক্ষা কমিশন বাতিলের আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন বেগবান করতে হবে। তখনকার ছাত্রসমাজ ইংরেজি ভাষা ও অন্যান্য ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করলেও আজ পাহাড়ে বসাবাসরত জাতিসত্তাদের ভাষা প্রায়ই বিলুপ্তির পথে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও অনেক শিক্ষা কমিশন গঠন হয়েছে, কিন্তু পাহাড় ও সমতলের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাদের ভাষা-সংস্কৃতি রক্ষার সৎ ইচ্ছা দেখা যায়নি। ২০১৭ সালের দিকে পাঁচটি জাতিসত্তার ভাষার শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলেও ঘাটতি রয়েছে দক্ষ শিক্ষকের।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানে বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেওয়াসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১১ দফা নির্দেশনা জারি করে পাহাড়িদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার ষড়যন্ত্র জারি রেখেছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার। তাই সংবিধানের গণবিরোধী ধারা পরিবর্তন করে পাহাড়িদের সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ সকলের অধিকার সংরক্ষিত হয় এমন সংবিধান তৈরি করতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি বন্ধ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও মানসম্মত শিক্ষা চালু করতে হবে।
যুব নেতা ধর্মশিং চাকমা বলেন, রাষ্ট্রীয় মদদে সুবিধাবঞ্চিত সমতলের বাঙালিদের পাহাড়ে পুনর্বাসন করার পর থেকে পাহাড়ে ভূমি বেদখল শুরু হয়। কখনো উন্নয়নের নামে, পর্যটনের নামে, সেনা ক্যাম্প স্থাপনের নামে পাহাড়িদের ভুমি বেদখল করা হচ্ছে। তিনি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে পাহাড়িদের প্রথাগত ভুমি অধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান।
নারী নেত্রী রিপনা চাকমা বলেন, নিরাপত্তার নামে করে পাহাড়ে সেনা শাসন জারি করা হলেও এ সেনা শাসন পাহাড়ে জনগণের নিরাপত্তার বড় হুমকি। সেনাবাহিনীর মদদে খুন, গুম, ভুমি বেদখল, নারী ধর্ষণ করা হচ্ছে। তল্লাশির নামে সেনা সদস্য কতৃক নারী ধর্ষণ করা হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে পাহাড় থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহার করে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।