শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি পেশ

0

চট্টগ্রাম ।। আগামী ১৩ জুনের মধ্যে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণাপূর্বক স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক হল খুলে দেওয়াসহ ৫ দফা দাবিতে চট্টগ্রামে গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন ২০২১) চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীবৃন্দ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের বরাবরে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করে বলা হয়, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি পেশ করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও প্রযুক্তি) স্মারকলিপি গ্রহণে বার বার অস্বীকৃতি জানানোতে জেলা প্রশাসকের সিএ এর কাছে দুই সহস্রাধিক গণস্বাক্ষর সহ স্মারকলিপি জমা দিতে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়। এই হয়রানির প্রতিবাদে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে নিন্দা জানায়। এর পূর্বে বেলা এগারোটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শাহ মোঃ শিহাবের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মুহসিন কলেজ শিক্ষার্থী রিপা মজুমদার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমন সৈয়দ, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান খান ও পলিটেকনিক শিক্ষার্থী অয়ন সেন গুপ্ত।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, “প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে গত ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে আমাদের দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রকারান্তরে আমাদের জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিই যেন থমকে আছে। গত প্রায় দেড় বছর ধরে একটানা সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের সম্মুখীন। আমরা দেখেছি করোনাকালে সারাদেশের মানুষের উল্লেখযোগ্য একটা অংশের রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের উপরেও দারুণভাবে পড়েছে। কারণ শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশই নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান; শিক্ষাজীবন শেষে পরিবারের হাল ধরার দায় থাকে। একদিকে পরিবারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত, অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারছে না। এদিকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমাও পেরিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও অনেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্যও আবেদন করতে পারছে না। সব মিলিয়ে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন এখন অনিশ্চয়তার দোলাচলে। এছাড়াও সারাদেশে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা-কার্যক্রমের বাইরে থাকায় তাদের মধ্যে হতাশা, মাদকাসক্ত হওয়া, নানাবিধ অপরাধে জড়িয়ে পড়া ও আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে সারাদেশের কয়েক কোটি শিক্ষার্থীর বিপন্নপ্রায় জীবনকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষা-কার্যক্রম স্বাভাবিক করা ছাড়া কোনও গত্যন্তর নেই।”

বক্তারা সমাবেশ থেকে ৫ দফা দাবি ঘোষণা করেন এবং দাবি মেনে না নিলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন।

দাবিগুলো হলো:

১. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ১৩ জুনের মধ্যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক হল খুলে দিতে হবে।

২. স্থগিত ও আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো গ্রহণের জন্য দ্রুত রুটিন প্রকাশ করতে হবে।

৩. সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ভ্যাক্সিনেশনের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

৪. শিক্ষার্থীদের করোনাকালের সকল ধরনের বেতন-ফি মওকুফ করতে হবে।

৫. করোনাকালে শিক্ষাব্যাবস্থার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More