সংক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার মিছিলে পুলিশী হামলা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের

0

মিছিলকারীদের ধাওয়া করছে পুলিশ। ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি।


ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

গণঅভ্যুত্থানে আঁকা গ্রাফিতির ছবি পাঠ্যপুস্তকে পুনঃস্থাপন, সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত ও উগ্র জাতীয়তাবাদী সংগঠন ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ কর্তৃক আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর নৃশংস হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি ২০২৫) সংক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ শেষে দুপুরের দিকে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে যাবার সময় শিক্ষা ভবনের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেয়। এ সময় মিছিলকারী ছাত্র-জনতা ব্যারিকেড সরিয়ে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করে, টিয়ারস্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে এবং লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

উক্ত পুলিশী হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। 

যৌথ বিবৃতিতে ছাত্র জোটের নেতৃবৃন্দ পুলিশের এ হামলায় হামলায় বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী তাসমিয়া নেবুলা, মোঃ ইব্রাহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রিয়াদ, ঢাকা মহানগর সভাপতি তৈয়ব ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার  আহ্বায়ক ইভান তাহসিব, ঢাকা নগরের সাংগঠনিক সম্পাদক পংকজ নাথ সূর্য, ইডেন কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়মা মুনমুন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সাইনা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সংগঠক মারুফ ভুঁইয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সংগঠক বাহাদুর ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক কেএম আব্দুল্লাহ নিশাত, ঢাকা মহানগর সংসদের সহ-সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, ঢাকা নগরের সাংগঠনিক সম্পাদক অনন্ত সরকার, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক  সংগঠক নাঈম উদ্দীন ও আশেক মাহমুদ, শিক্ষার্থী তাহমীদ চৌধুরী, শরীফ অদ্রি, পথচারী মো: বাবু এবং সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

মিছিলকারীর ওপর পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করছে। ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি।


বিবৃতিতে ছাত্রজোটের নেতৃবৃন্দ বলেন, উগ্র জাতীয়তাবাদীদের চাপে পাঠ্যপুস্তক থেকে গণঅভ্যুত্থানে আঁকা গ্রাফিতির ছবি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতজানু নীতির প্রকাশ। ১৫ জানুয়ারি আদিবাসী শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ কর্তৃক হামলার সময় পুলিশ ও প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আজ উক্ত হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী-জনতার মিছিলে হাইকোর্ট মোড় ও কার্জন হলের সামনে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস, ও জলকামান ব্যবহার করে সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। ক্যাম্পাস এলাকায় পুলিশি হামলায় শিক্ষার্থীরা গুরুতর আহত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরব থেকেছে। পুলিশ যখন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়, তখনও প্রশাসন এ হামলা প্রতিরোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ১৭ জুলাই ২০২৪-এর ঘটনার পুনরাবৃত্তি মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো যে, বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। আমরা ছাত্র জনতার উপর পুলিশি হামলা এবং সারাদেশের নাগরিকদের জননিরাপত্তার ক্ষেত্রে নির্লিপ্ত ভূমিকার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানাই।

যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীব নাঈম, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) তাওফিকা প্রিয়া।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More