সংখ্যালঘু জাতিসমূহের ওপর বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে ছাত্র ধর্মঘট পালিত

0

নিজস্ব প্রতিবেদক,সিএইচটিনিউজ.কম
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ডাকে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে সফলভাবে ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়েছে। সংখ্যালঘু জাতিসমূহের ওপর বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে ও সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের দাবিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ আজ বৃহস্পতিবার এ ছাত্র ধর্মঘট পালন করে।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সরকারী কলেজ, সরকারী মহিলা কলেজ, টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়, টিটিসিসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে অংশগ্রহণ করেনি এবং নতুন কুড়ি ও ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজে কিছু সংখ্যক বাঙালি ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করলেও পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে অংশ নেয়নি। এছাড়া জেলার দিঘীনালা, মহালছড়ি, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি, রামগড় এবং লক্ষীছড়ি উপজেলার সকল স্কুল কলেজে সফলভাবে ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়েছে।

অন্যদিকে রাঙামাটি জেলার নান্যাচর, কাউখালী, জুরাছড়ি, বরকল, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি, লংগদু, বাঘাইছড়ি ও রাঙামাটি সদরের কুদুকছড়ি ও মানিকছড়ি, বন্দুকভাঙাসহ বিভিন্ন জায়গায় স্কুল-কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে অংশগ্রহণ না করে সফলভাবে ধর্মঘট পালন করেছে।

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মারমা এক বিবৃতিতে ক্লাসে অংশগ্রহণ না করে দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশের মাধ্যমে ছাত্র ধর্মঘট সফল করায় ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকবৃন্দের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ এবং দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী দিনে আরো বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এক জাতির দেশ নয়৷ বহু জাতি ও বহু ভাষা-ভাষীর দেশ। কিন্তু সরকার সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বিল পাসের মাধ্যমে জোরপূর্বক বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সংখ্যালঘু জাতিসমূহের অস্তিত্বকে চিরতরে মুছে দিতে চাইছে। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সংখ্যালঘু জাতিসমূহ বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়া সংবিধান কিছুতেই মেনে নেবে না।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, শুধু বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়া নয়, সরকার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলবত্‍ রেখে দেশের অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ২য় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করেছে। এটা চরম বৈষম্যমূলক, যা কোন সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজে কল্পনা ও করা যায় না।

বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সংখ্যালঘু জাতিসমূহকে নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়ে স্বীকৃতি প্রদান, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা, প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার ও সেটলারদের সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসনের দাবি জানান।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More