সাজেকের মাজলঙে ইউপিডিএফের আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ

সাজেক প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট ২০২৪
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আটক ইউপিডিএফ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সাজেকের মাজলঙ বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে করেছে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো।
আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট ২০২৪) সকাল ১০টায় ‘এক দেশে দুই শাসন মানি না’ শ্লোগানে ইউপিডিএফ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে প্রথমে মাচলং বাজার এলাকায় একটি মিছিল বের করা হয়। পরে তারা সমাবেশে মিলিত হন।
মাচলং বাজারে ইউপিডিএফ কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সদস্য সিমা চাকমা সঞ্চালনায় ও ইউপিডিএফ সংগঠক রিয়েল চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন হিল ইউমেন্স ফেডারেশনের বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি সুখী চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাজেক থানা শাখার সভাপতি নিউটন চাকমা ও মাজলঙ্ এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বি রতন চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের যে পরিস্থিতি তা খুবই উদ্বেগজনক। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম এখনো সেনাশাসন ‘অপারেশন উত্তরণ’ কবলে রয়েছে। যুগ যুগ ধরে এক দেশে দুই শাসন জারি রেখে এদেশের শাসকগোষ্ঠি পাহাড়ি জনণের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে আসছে। নিরাপত্তার নামে নিয়োজিত সেনাবাহিনী এখন পাহাড়িদের নিরাপত্তাহীনতার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বাংলাদেশকে একটি বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন তুলে নিয়ে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম করতে হবে।

বক্তারা সম্প্রতি খাগড়াছড়ির রামগড়, রাঙামাটি ও বান্দরবানে পাহাড়ি নারী-শিশুর ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনায়্ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বন্যায় দুর্যোগের সময় এক দিনের ব্যবধানে পর পর তিনটি স্থানে ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা কখনো শুভ লক্ষণ নয়। পাহাড়ে ধর্ষণের ঘটনায় বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। ১৯৯৬ সালে কল্পনা চাকমাকে যেভাবে লে. ফেরদৌস তার গংরা নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে গুম করে ফেলে তা আমরা ভুলে যায়নি। কিন্তু এ ঘটনার আজো কোন সুবিচার আমরা পাইনি।

ইউপিডিএফের ওপর দমন-পীড়নের কথা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়িত জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী দল ইউপিডিএফকে দমন করার জন্য এদেশের শাসকগোষ্ঠি নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ইউপিডিএফের বহু নেতা-কর্মীকে হত্যা, গুম ও মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাগারে অন্তরীণ করা হয়েছে। এখনো ইউপিডিএফ নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমা, পিসিপি নেতা কুনেন্টু চাকমা সহ বহু নেতা-কর্মী কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। সমতলের কারাগার থেকে অনেক বন্দীকে মুক্তি দেয়া হলেও ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে না।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে ইউপিডিএফ নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমা, পিসিপি নেতা কুনেন্টু চাকমাসহ আটক সকল নেতা-কর্মীকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।