সাজেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তথাকথিত ‘জেলায় উন্নীতকরণ’ বিষয়ে আলোচনা সভা

0

সাজেক প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২ আগস্ট ২০২৪

‘শাসকগোষ্টীর রচিত কাহিনী ছুঁড়ে ফেলুন, প্রকৃত ইতিহাস জানুন’ শ্লোগানে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তথাকথিত “জেলায় উন্নীতকরণ” (১৮৬০) উপলক্ষে রাঙামাটির সাজেকে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।

বৃহষ্পতিবার (১ আগষ্ট ২০২৪) দুপুর ২টা সময় ইউপিডিএফের সাজেক ইউনিটের উদ্যোগে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় টুকু চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের সংগঠক ইয়ান চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক অনুপ চাকমা।

আলোচনা সভায় আলোচকরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এক সময় স্বতন্ত্র ও স্বাধীন রাজ্য ছিল। মুঘল আমলে নাম মাত্র কার্পাস কর দিয়ে এখানকার রাজা এ রাজ্য স্বাধীনভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। ব্রিটিশরা বাংলায় শাসন ক্ষমতা নেয়ার পর কয়েক বছর পর তাদের আগ্রাসী নীতির কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অধিক কর দাবি করলে তাদের সাথে সেই সময়ের চাকমা রাজার সাথে ব্রিটিশদের যুদ্ধ এবং সন্ধি হয়। ব্রিটিশরা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাতন্ত্র্যকে মেনে নেয়। ১৭৬৩ সালে হ্যারিভার্লেস্ট চাকমারা স্বাধীন বলে প্রতিবেদন দেয় এবং সীমানা নির্ধারণ করা হয় উত্তরে ফেনী, দক্ষিনে সাঙ্গু, পূর্বে কুকি রাজ্য,পশ্চিমে নিজাম রোড। ১৭৮৭ সালে কলকাতায় ব্রিটিশদের সাথে চুক্তি হয়। এতে ১.স্বাধীনতা স্বীকার, ২.মুদ্রা মাধ্যমে ৩০০ মণ তুলা প্রদান, ৩.অনুপ্রবেশ বন্ধ ও ৪.আরাকান যুদ্ধাবাজদের রক্ষা করার কথা বলা হয়। কর প্রদান করলেও তারা ব্রিটিশশের প্রজা ছিলেন না। ১৮৬০ সালের ১ আগস্ট তথাকথিত এক আইনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তাদের শাসন কাঠামোর আওতায় নিয়ে আসে। তবে পাহাড়িদের বিশেষ রীতি ও বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ এবং অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ১৯০০ রেগুলেশন আইন তৈরি করে। এ আইনেরে ফলে সমতল থেকে বাঙালিরা অবৈধভাবে বসতিস্থাপন করতে পারতো না।

বক্তারা আরো বলেন, ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর পাকিস্তান বেলুচ রেজিমেন্ট পাঠিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম দখল করে নেয়। পরবর্তীতে পাকিস্তানের কবল থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামের “বিশেষ অঞ্চল”-এর মর্যাদা সংবিধানে সম্পূর্ণ উপেক্ষা কারা হয়। উপরন্তু পাহাড়িদেরকে “বাঙালি” হওয়ার পরামর্শ বা চাপ দেয়া হয়েছিল। যা পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিসত্তাসমূহের জন্য অবমাননাকর। আশির দশকের শুরু থেকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সমতলের সাধারণ বাঙালি জনগণকে রেশনিং ব্যবস্থাসহ পাহাড়িদের জায়গা-জমি দখল করে বসতিস্থাপন করে দেয়া হয়।

সভায় আলোচকরা দমন-পীড়ন, অধিকার হরণ, ভূমি বেদখল ও মুখোশ বাহিনী দিয়ে আন্দোলন নস্যাতের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতন ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More