সাজেকে শহীদ মিটন চাকমা’র স্মরণে শোকসভা ও শ্রদ্ধা নিবেদন

0

শহীদ মিটন চাকমার স্মরণে সাজেকে শোকসভার আয়োজন করা হয়। 

সাজেক প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

“দালাল লেজুড়দের বিপরীতে বীর শহীদ মিটন এক উজ্জ্বল নাম” এই শ্লোগানে পানছড়িতে শাসকচক্রের গুটি সন্তু লারমার ভাড়াটে বাহিনীর হামলায় নিহত ইউপিডিএফ সংগঠক ও সাবেক ছাত্র নেতা শহীদ মিটন চাকমার স্মরণে রাঙামাটির সাজেকে শোকসভা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।

আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর ২০২৪) দুপুরে ইউপিডিএফ এ শোকসভার আয়োজন করে।

স্মরণসভার আগে সকাল ১০টায় শহীদ মিটন চাকমা’র স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতা-কর্মীবৃন্দ, বাঘাইহাট এলাকার সুশীল সমাজ, জনপ্রতিনিধি ও শিশু-ছাত্র-যুবকরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে শিশুরা।

এরপর শহীদ মিটন চাকমাসহ এযাবৎ অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন সে সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

পরে দুপুর ১:০০টার সময় অনুষ্ঠিত শোকসভায় ইউপিডিএফ বাঘাইছড়ি ইউনিটের সমন্বয়ক অক্ষয় চাকমার সভাপতিত্বে ও সংগঠক ইয়ান চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পিসিপির বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি পলেন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি বীরো চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনে বাঘাইছড়ি উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অর্পনা চাকমা, সাজেক গণ অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব বাবুধন চাকমা, সাজেক ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য পরিচয় চাকমা ও বাঘাইহাট এলাকার সমাজ সেবক রিপ বাবু চাকমা।

সভায় ইউপিডিএফ সংগঠক অক্ষয় চাকমা বলেন, মিটন চাকমা শুধু পাহাড়ে নয়, দেশের সমগ্র নিপীড়িত মানুষের উজ্জ্বল নক্ষত্র। যে সময় পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে নিজের স্বার্থে জন্য চাকরি নামক দাসত্বে বরণ করে নেয়, সে সময় মিটন চাকমা উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে জাতীয় স্বার্থের জন্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল। সুতরাং তার আত্মবলিদান কখনো বৃথা যেতে পারে না।

যুবনেতা বীরো চাকমা বলেন, যে কোন জাতি সমাজে যুবকদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। জাতীয় দুঃসময়ে সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন একজন যুবক নিরপেক্ষ থাকতে পারে না। মিটন চাকমার আত্মবলিদান থেকে শক্তি নিয়ে যুবকদেরকে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে সামিল হতে হবে।

পলেন চাকমা বলেন, অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই হাজার মিটন জন্ম হতে হবে।

অর্পনা চাকমা বলেন, মিটন চাকমাকে হত্যা করার অর্থ হচ্ছে আন্দোলন সংগ্রামে বাধা প্রদানের অংশ। যতই বাধা আসুক সকল ষড়যন্ত্রে বিরুদ্ধে পুরুষের পাশাপাশি আমাদের নারীদেরও অগ্রসর হতে হবে।

রিপ বাবু বলেন, সংঘাত বন্ধে  জন্য জনগণের পক্ষে থেকে বহু বার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবু সংঘাত বন্ধ হচ্ছে না। তাই এ শোকসভা মধ্যে দিয়ে সকল আঞ্চলিক দলের নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান থাকবে জাতীয় মুক্তির জন্য অচিরেই সংঘাত বন্ধ করুন।

জনপ্রতিনিধি পরিচয় চাকমা বলেন, জাতির নেতৃত্ব দেওয়া সহজ নয়। যারা অধিকারের জন্য লড়াই করে আত্মাবলিদান দিয়েছে তাদের শ্রদ্ধা জানাই। টিকে থাকতে হলে অবশ্যই লড়াই করতে হবে।

বাবুধন চাকমা বলেন, টিকে থাকতে হলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে হবে। এমন শোকসভা কারোর কাম্য নয়। যে হারায় সেই একমাত্র হারানোর বেদনা জানে। মিটন চাকমার আত্মাবলিদান হোক অধিকারের লড়াইয়ের শক্তি এবং এ শোক হোক জাতির শেষ শোক। অবিলম্বে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত যাতে বন্ধ করা হয় সেটাই এই শোকসভা থেকে জনগণের পক্ষ থেকে আহ্বান রাখছি।

উল্লেখ্য, গত ১০ নভেম্বর ২০২৪ খাগড়াছড়ির পানছড়িতে শাসকগোষ্ঠির এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী সন্তু লারমার ভাড়াটে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দ্বারা হত্যার শিকার হন মিটন চাকমা।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More