সাজেকে হয়ে গেলো বয়োজ্যেষ্ঠদের গোসল করানো ও আশীর্বাদ গ্রহণ অনুষ্ঠান

সাজেক প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈ-সা-বি (বৈসুক-সাংগ্রাই-বিঝু, বিষু-বিহু…) উপলক্ষে রাঙামাটির সাজেকে বয়োজ্যেষ্ঠ মুরুব্বীদের গোসল করিয়ে আশীর্বাদ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল ২০২৫) দুপুর ১:০০টায় ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে শিক্ষার্থী, যুবক-যুবতী, নারী ও শিশুরা অংশগ্রহণ করেন।
পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসবের পুরোনো রীতি অনুসরণে এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ মুরুব্বীদের এক জায়গায় একত্রিত করে তাদেরকে ফুলের পাপড়ি ভেজানো পানিসহকারে গোসল করানো হয়। গোসল করানো শেষে বয়োজ্যেষ্ঠ মুরুব্বীদেরকে ফুলের পাপড়ি ছিঁটিয়ে সংবর্ধনা সহকারে চেয়ারে বসানো হয়। এরপর উপস্থিত সকলে বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করেন।

এরপর নবীন প্রবীনের মধ্যে জাতীয় রীতি-নীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ে মতবিনিময় হয়। এতে বয়োজ্যেষ্ঠ মুরব্বী বিমল কান্তি চাকমা এ মহৎ উদ্যোগকে প্রশংসা করে বলেন, বৈ-সা-বি শুধু উৎসব নয়। এটা আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব, ঐতিহ্য-সংস্কতি, রীতি-নীতির সাথে জড়িয়ে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যখন যুবক ছিলাম তখন যুবক-যুবতি মিলে গ্রামে ঘরে ঘরে গিয়ে বয়োজ্যেষ্ঠদের গোসল করাতাম, আশীর্বাদ নিতাম। ধানের কুরুম (বেতের তৈরি এক ধরনের ঝুড়ি) কোমরে বেঁধে ঘরে ঘরে গিয়ে হাঁস-মুরগিদের উঠানে ডেকে খাদ্য খাওয়াতাম। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে।


ইউপিডিএফ সংগঠক ইয়ান চাকমা বলেন, সংস্কৃতি হলো জাতির অঙ্গ। একটা জাতি টিকে থাকে তার সংস্কৃতির মধ্যে দিয়ে। কিন্তু আমাদের নিজস্ব জাতীয় সংস্কৃতি প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে। আজকাল তরুণ প্রজন্ম অপসংস্কৃতির চর্চার মধ্যে দিয়ে গড়ে উঠছে। তারা ভুলে যাচ্ছে নিজেদের জাতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, রীতি-নীতি। তাই এবারের বৈ-সা-বি উৎসবকে উপলক্ষ করে জাতীয় রীতি নীতি স্মরণ করাতে আজকের এই সামান্য অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
মতবিনিময় শেষে ৮০ জন বয়োজ্যেষ্ঠ নারী-পুরুষকে উপহারস্বরুপ গেঞ্জি, গামছা ও পিনন প্রদান করা হয়।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।