সারাদেশে নারী ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের সমাবেশ

চবি প্রতিনিধি।। খাগড়াছড়িসহ সারা দেশে নারী ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা।
আজ রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ করেন।
সমাবেশে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রোনাল চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ক্লিনটন চাকমা, একই বর্ষের শিক্ষার্থী রুমেন চাকমা। এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম।
সংহতি বক্তব্যে অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শত শত নিরাপত্তাবাহিনীর ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও কেন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত দ্বারা নিজ বাড়িতে পাহাড়ি নারী ধর্ষণের শিকার হয়, রাতের আধাঁরে ডাকাতি হয়? কেন মাইকেল চাকমা’রা হারিয়ে যায়? পাহাড়িরা কেন আজ অনিরাপদ? এই নিরাপত্তা বাহিনী রাখার স্বার্থকতা ও যৌক্তিকতা কোথায়?

তিনি সিলেটে এমসি কলেজে এবং খাগড়াছড়িতে নারী ধর্ষণের ঘটনায় বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের মাধ্যমে দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, খাগড়াছড়ি সদরের বলপিয়ে আদামে গণধর্ষণের ঘটনা বাদেও গত এক মাসের মধ্যে বান্দরবানের লামায় এক পাহাড়ি নারীকে গণধর্ষণ,মহালছড়িতে ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণ,তাইন্দং খেওয়াপাড়ায় এক পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের প্রচেষ্টা,বাঘাইছড়ি সাজেকে এক নারীকে ধর্ষণের প্রচেষ্টা, দিঘীনালায় এক পুলিশ কনস্টেবল কতৃক ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, সাভারে শিক্ষার্থী নিলা রায়কে হত্যা, সিলেটে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মী কতৃক স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কারণ হচ্ছে বিচারহীনতা। যদি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতো তাহলে এমন ঘটনা ঘটতো না।

তারা খাগড়াছড়িতে আলোচিত ধর্ষণের ঘটনায় মেডিকেল রিপোর্টের তথ্য ভিকটিমের পরিবারকে জানানো হয়নি এবং প্রকৃত ধর্ষকদের পরিচয়ও গোপন করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
তারা বলেন, ধর্ষণের ঘটনার সাথে কোন না কোনভাবে ক্ষমতাশালী গোষ্ঠীর সম্পর্কিত ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশে সংঘটিত নারী ধর্ষণ, খুনের সঠিক বিচার হচ্ছে না। যার কারণে কুমিল্লার তনু হত্যা ও পাহাড়ে কল্পনা চাকমা অপহরণের বিচার এখনো হয়নি।
সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করে খাগড়াছড়িসহ দেশে সংঘটিত ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাসমূহের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।