সিএইচটি রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে দীঘিনালায় ইউপিডিএফের অবস্থান ধর্মঘট

দীঘিনালা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪
আদালতের মাধ্যমে সিএইচটি রেগুলেশন ১৯০০ বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সড়কে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) দীঘিনালা ইউনিট।
আজ বুধবার (১০ জুলাই ২০২৪) সকাল ১০টা হতে ১২টা পর্যন্ত দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া সড়কে এই অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হয়। এতে এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন।
অবস্থান ধর্মঘটে সভাপতিত্ব করেন ইউপিডিএফ’র দীঘিনালা ইউনিটে সমন্বয়ক মিলটন চাকমা ও সঞ্চালনা করেন দীপন চাকমা।
এতে উপস্থিত থেকে আরো ৫১ নং দীঘিনালা মৌজা হেডম্যান প্রান্তর চাকমা, ৪৭ নং ধনপাদা মৌজা হেডম্যান যুব লক্ষন চাকমা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আনন্দ মোহন চাকমা, দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা, ৫ নং বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু গগন বিকাশ চাকমা প্রমুখ।
হেডম্যান প্রান্তর চাকমা বলেন, দেশের বৃহত্তর জাতিগোষ্ঠী বাঙালি হলেও আমাদের প্রথাগত আইন, রীতি-নীতি, অধিকার মুছে দেয়ার অধিকার তাদের নেই। ১৯০০ রেগুলেশন আইন জুম্মদের রক্ষাকবচ। তাই এই আইন বাতিলের ষড়যন্ত্র রুখতে যা যা দরকার তা করতে হবে। হেডম্যান, কার্বারিসহ সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই রেগুলেশন রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে।

দীঘিনালা ইউপি চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা বলেন, সরকার এক তরফাভাবে পাহাড়িদের রক্ষাকবচ ১৯০০ রেগুলেশন বাতিল করে পাহাড়িদের প্রথাগত অধিকার কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। পাহাড়ি জনগণের সাথে কোন আলোচনা না করে পাহাড়িদের প্রথাগত শাসন ব্যবস্থা তুলে দিতে চাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যদি পাহাড়িদের অধিকার কেড়ে নেয়া হয় এবং ১৯০০ আইন জুম্মদের বিপক্ষে চলে তাহলে যা যা করা দরকার তা পাহাড়িদের করতে হবে। তা না হলে বেঁচে থাকার জন্য কোন পথ থাকবে না। তিনি পাহাড়িদের প্রথাগত আইন সুরক্ষায় ১৯০০ সালের রেগুলেশন বলবৎ রাখার দাবি জানান।
আনন্দ মোহন চাকমা বলেন, সরকার পাহাড়িদের প্রথাগত আইন, রীতি-নীতি, অধিকার মুছে দেওয়া ষড়যন্ত্র করছে। ১৯০০ রেগুলেশন আইন যদি বাতিল করা হয় তাহলে পাহাড়িদের ন্যূনতম অধিকারটুকুও থাকবে না। তাই সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত এই আইন পাহাড়িদের পক্ষে না আছে।
মিল্টন চাকমা বলেন, শেখ মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা নানা ষড়যন্ত্র করে পাহাড়িদের তছনছ করে দিতে চাচ্ছে। ২০১১ সালে ৩০ জুন সংবিধানে বাঙালি বানিয়েছে। এখন আবার পাহাড়িদের প্রথাগত অধিকারের রক্ষাকবচ ১৯০০ সালের রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র করছে। তিনি সবাইকে সরকারের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
বক্তারা সিএইচটি রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধ করে তা বলবৎ রাখার দাবি জানান।
অবস্থান ধর্মঘট শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। বাবুছড়া কলেজ হতে বাবুছড়া নোয়াপাড়া গিয়ে মিছিলটি শেষ করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা ‘১৯০০ সালের আইন বাতিল, মানি না মানবো না; ভূমি রক্ষা সংগ্রাম চলছে, চলবে; পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দিয়ে দাও, দিতে হবে…” ইত্যাদি শ্লোগান দেন।

সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।