সেটলার কর্তৃক নির্যাতন-হুমকি: জীবনের নিরাপত্তায় আর দোকান দেবেন না প্রীতি ত্রিপুরা

0

মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সেটলার বাঙালি কর্তৃক বার বার নির্যাতন ও হুমকির মুখে জীবনের নিরাপত্তায় আর দোকান না দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানয়েছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের টাকারমণি পাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রীতি ত্রিপুরা।

টাকারমনি পাড়ায় তার ছোটখাটো একটি মুদি দোকান রয়েছে। সেখানে তিনি চাও বিক্রি করে থাকেন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ দিবাগত মধ্যরাত ১২টায় মো. তাজু নামে এক সেটলার বাঙালি তাঁর দোকানে গিয়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে এসে পরদিন সকালে আবার দোকানে গিয়ে তার ওপর আক্রমণ চালায় ও মারধর করে। এ ঘটনার পর থেকে তিনি নানা আশঙ্কার মধ্যে ছিলেন।

উক্ত ঘটনা সমাধানের নামে গতকাল রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টার সময় টাকারমণি পাড়া যাত্রী ছাউনিতে গোমতি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. কামরুল ও সাবেক মেম্বার মো. জুন-এর নেতৃত্বে এক সালিশ বৈঠক করা হয়। উক্ত সালিশে শতাধিক সেটলার বাঙালি ও ভুক্তভোগী প্রীতি ত্রিপুরাসহ মাত্র ৪ জন ত্রিপুরা প্রতিনিধিকে উপস্থিত রেখে দায়সারাভাবে সমাধান করে দেওয়া হয়। সালিশে অভিযুক্ত মো. তাজুর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং তার পক্ষাবলম্বন করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, গতকাল উক্ত একপাক্ষিক সালিশের পর আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় টাকারমণি পাড়ার মো. ফরিদের ছেলে আফরোদ্দীন (১৯) প্রীতি ত্রিপুরার দোকানে গিয়ে কোন কারণ ছাড়াই তাকে মারধরের চেষ্টা চালিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এ সময় দোকানে থাকা লোকজন আফরোদ্দীনকে বাধা দিয়ে রাখায় কোন রকমে অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে রক্ষা পান দোকানদার প্রীতি ত্রিপুরা।

এই বিষয়ে ভুক্তভোগী প্রীতি ত্রিপুরা এই প্রতিবেদককে বলেন, গতকাল সালিশে আমাদের কোন মতামত গ্রহণ না করে উপস্থিত বাঙালীদের অনুরোধে মেম্বার মো. কামরুল মো. তাজুকে ক্ষমা করে দেয়। এ সালিশে মো. তাজুর বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ সময় আমরা কোন কথা বলার সুযোগ পাইনি। তারপরও মেম্বার যেহেতু সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তাই আজ আমি আবার দোকান খুলেছি। কিন্তু আজকে মো. আফরোদ্দীন আমার দোকানে এসে আবার আমাকে মারধর করার চেষ্টা করে। দোকানে থাকা লোকজন বাধা দেয়ায় আমি কোন মতে রক্ষা পেয়েছি। নিজের দোকানে বার বার এমন ঘটনায় আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেখানে আর দোকান দেবো না। কষ্ট হলেও আমি অন্য উপায়ে উপার্জন করে পরিবারের খরচপাতি মেটানোর চেষ্টা করবো।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি যাতে সেখান দোকান দিতে না পারি এবং আমাকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করার জন্য পরিকল্পিতভাবে আমার উপর বার বার হামলা করা হচ্ছে। আমি সেখানে দোকান দিয়ে অবস্থান করলে হয়তো সত্যি সত্যিই তারা আমাকে মেরে ফেলবে।


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


সিএইচটি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More