সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রত্যাহারের দাবি গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের

0

ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।

শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী রাজু ভাস্কর্যে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ছাত্র জোটের নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান।

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর নির্যাতনে বিচার বহির্ভুতভাবে যুবদল নেতা হত্যার প্রতিবাদে এবং সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রত্যাহারে দাবিতে উক্ত বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হতে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশে মিলিত হয়।

ছাত্র জোটের সমন্বয়ক রাফিকুজ্জামান ফরিদ এর সভাপতিত্বে ও সহ-সমন্বয়ক জাবির আহমদ জুবেল এর সঞ্চালনায় সমাবেশে ছাত্র জোটের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান শেষ হলেও গুম-খুনের রাজত্ব শেষ হয়নি। নিরাপত্তার নামে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার মধ্য দিয়ে জনগণকে আরো বেশি অনিরাপদ করা হচ্ছে।”

তিনি কুমিল্লায় যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম হত্যাসহ সকল বিচার বহির্ভূত হত্যার বিচারের দাবি জানান।

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ এর সভাপতি অঙ্কন চাকমা বলেন, “সেনাবাহিনী যে ন্যাক্কারজনক বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ডগুলো করছে তাদের সেই অনুশীলনের জায়গা হচ্ছে পাহাড়। তারা সেখানে অনুশীলন করতে করতে যখন ক্ষমতার দম্ভ এসে যায় তখন তারা সমতলে তা প্রয়োগ করে। ইতিহাস সাক্ষী, বাংলাদেশে ৭৫ পরবর্তী যারা সেনাশাসনে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে তারা সবাই পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত ছিল”।  

তিনি নান্যাচরে ছাত্র নেতা রমেল চাকমাকে সেনা হেফাজনে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা, বান্দরবানে বম জনগোষ্ঠির ৫ম শ্রেণির ছাত্র ভানথাংপুই বমকে বিচার বহির্ভুতভাবে হত্যার ঘটনা তুলে ধরেন।


বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ হায়দার চঞ্চল বলেন, ‍‍“সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ। মাজার ভাঙ্গা থেকে শুরু করে নারী ফুটবলারদের উপর আক্রমণ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বাস্তব চিত্র। যৌথ বাহিনী এই আরাজকতা না থামিয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে৷”

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমদ জুবেল বলেন, “অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে যৌথ বাহিনী শ্রমিক হত্যার মধ্য দিয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করে৷ এর ধারাবাহিকতায় তৌহিদুল ইসলামের হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই সরকার গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে এপর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ১৪ জন নাগরিককে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা সংঘটিত করে গণঅভ্যুত্থানের সাথে প্রতারণা করেছে।”

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এর সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়েও সেনাবাহিনীর বিতর্কিত ভূমিকা আমরা ভুলিনি৷ যারা সেনা মদদে ক্ষমতায় এসেছে তারা জনগণের সাথে বেঈমানী করেছে৷ এর ফলাফল হিসাবে একের পর এক বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে৷ কিন্তু এদেশে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বারবার বিদ্রোহ হয়েছে৷ আজও জনগণের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে৷”

সমাবেশের সভাপতি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, “জনগণ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিলো৷ পুলিশী রাষ্ট্র গঠন করা অভ্যুত্থানের চেতনা বিরোধী। অথচ আমরা দেখছি বর্তমান সরকারের আড়ালেও যারা সরকার পরিচালনা করছে তাদের দ্বারা এই বিচার বহির্ভূত, হত্যাকাণ্ড, গুম, খুনের সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।”

সমাবেশ থেকে ছাত্র নেতারা অবিলম্বে হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার, সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রত্যাহার ও সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানান।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More