সেনা কমান্ডারের প্রশ্নে গ্রাম পুলিশ সদস্য- ‘এখানে কোন সন্ত্রাসী নাই, অবৈধ কাজ-কারবারও চলে না’

0

সেনা সদস্যদের টহলের চিত্র। 

বর্মাছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ৩১ আগস্ট ২০২৫

গত ২৯ আগস্ট ২০২৫, শুক্রবার সকাল ৯টার সময় খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি জোনের অধীন খিরাম আর্মি ক্যাম্প থেকে হাবিলদার এনামুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ জনের একদল সেনা সদস্য কাউখালীর ফটিকছড়ি ইউনিয়নের ডলুপাড়া এলাকা পর্যন্ত টহল দেয়।

স্থানীয়রা বলছেন, হাবিলদার এনামুল অনেকটা পাগলাতে স্বভাবের লোক। টহলের সময় তিনি রাস্তায়, দোকানে যাকে দেখেন ছবি তুলেন। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করেন ‘এখানে চাঁদাবাজি হয় কিনা, সন্ত্রাসী আসে কিনা’।

এক পর্যায়ে তিনি (হাবিলদার) দোকানে বসে থাকা ফটিকছড়ি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ সদস্য নিশি চাকমাকে জিজ্ঞেস করেন- ‘এখানে অবৈধ ব্যবসা চলে? মদ, গাজা উৎপাদন করা হয়?’

হাবিলদারের এমন কথায় বিরক্ত হয়ে গ্রাম পুলিশ সদস্য নিশি চাকমা তাকে সাফ বলে দেন, ‘এখানে কোন সন্ত্রাসী নাই। চাঁদাবাজিও হয় না। অবৈধ কাজকারবারও চলে না। আপনাদের খিরাম ও শুকনাছড়ি ক্যাম্প থেকে প্রায় সময় এখানে এসে ঘুরে যায়। কোনদিন কোন প্রকারের অবৈধ জিনিস এখানে পায়নি। যদি আপনাদের কাছে প্রমাণ থাকে তাহলে আপনারা আইনানুগ ব্যবস্থা নেন।’

পরে সেনারা সেখান থেকে চলে যায়। যাওয়ার পথে জায়গায় জায়গায় কোথায় কী আছে তা দেখে।

এদিকে, গতকাল (শনিবার) খিরাম ক্যাম্প কমান্ডার আতিক খিরাম কাঠ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় কয়েকজন মুরুব্বীকে ক্যাম্পে ডেকে পাঠান। খিরাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আলীর নেতৃত্বে কাঠ ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াস সওদাগর ও শুক্কুর সওদারসহ ৮/৯ জনের প্রতিনিধি দল কমান্ডার আতিক সাহেবের সাথে দেখা করতে যান। কমান্ডার প্রতিনিধি দলকে বলেন- ‘আমার একটা শর্ত মানলে আপনারা দিন রাত ২৪ ঘণ্টা গাছ-বাঁশ নিতে পারবেন। আর আমার কথামত কাজ না করলে বা শর্ত না মানলে একটা গাছ-বাঁশও নিতে পরবেন না।’

কমান্ডার আতিক সাহেবের শর্ত হলো- ‘বন্দুকসহ একজনকে তাকে দিতে হবে’।

দেখা করতে যাওয়া প্রতিনিধি দলটি কমাণ্ডার আতিক সাহেবের কথা শুনে হতভম্ভ হয়ে যান। তারা তীব্র ঘৃণাভরে তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। তারা বলেন, ‘আমরা যে সমস্ত গাছ বাঁশ বেচা-কেনা করে ব্যবসা করছি সেগুলো বৈধ গাছ, বাঁশ। আমরা কোন সরকারি বনের গাছ-বাঁশ কেটে ব্যবসা করছি না।”

উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘অপারেশন উত্তরণ’ এর নামে যে সেনাশাসন চলমান রয়েছে তার ক্ষমতা বলে সেনারা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নজরদারি, খবরদারি করে থাকে। সেনা অফিসাররা প্রমোশন লভের আশায় নিরীহ পাহাড়িদেরকে বলির পাঁঠা বানাচ্ছে।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More