পাহাড়িদের জমি বেদখলে লাল মিয়ার অভিনব নিখোঁজ নাটক!

0

সিএইচটি নিউজ ডটকম
নিজস্ব প্রতিনিধি, লক্ষ্মীছড়ি: পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখলে সেটলাররা নানা কৌশল অবলম্বন করছে। কখনো জোরপূর্বক, কখনো অপহরণ, নিখোঁজ নাটক সাজিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা, কখনো সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখল করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

স্বেচ্ছায় নিখোৎজ নাটকের নায় লাল মিয়া। ছবি: সুপ্রভাত বাংলাদেশ-এর সৌজন্যে
স্বেচ্ছায় নিখোঁজ নাটকের নায়ক লাল মিয়া। ছবি: সুপ্রভাত বাংলাদেশ-এর সৌজন্যে

গত ১৩ আগস্ট খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে লাল মিয়া নামে এক সেটলার নিজেই আত্মগোপন করে নিখোঁজ বা অপহরণ নাটক সাজিয়ে এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সর্বশেষ গত ৪ সেপ্টেম্বর সে বান্যাছোলা আর্মি ক্যাম্পে হাজির হয়ে নিজেই অপহরণের কাহিনী বানিয়েছিল বলে স্বীকার করেছে (দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫)। একটি সূত্রে জানা গেছে, মঘাইছড়ির আওয়ামী লীগ নেতা মো: আলম এতদিন লাল মিয়াকে নিজ হেফাজতে লুকিয়ে রেখে ফায়দা লুটার চেষ্টা করেছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলাধীন পূর্ব ঢেবাতলী গ্রামে পাহাড়িদের (মারমাদের) শ্মশান ভূমি আনুমানিক ০.৬০ একর এবং মানিকছড়ি উপজেলার অন্তর্গত (লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার সীমান্ত) পশ্চিম ঢেবাতলী গ্রামে লাল বাবু সাঁওতাল ও পরাণ সাঁওতাল-এর ১.০০ একর পরিমাণ দ্বিতীয় শ্রেণীর জমি লাল মিয়া বেদখল করে। পরে পাহাড়িরা এতে বাধা দিলে সে নিজেই নিখোঁজ হয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করে। তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী ও পুলিশ তৎপর হয়ে পাহাড়িদের উপর চাপ সৃষ্টিসহ নানা হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই লাল মিয়া কৌশলে দু’জন সাঁওতালকেও ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করেছে। তাদের একজন হলেন শান্ত সাঁওতাল (৩৩) ও অপরজন হলেন উত্তম সাঁওতাল (২৮)। এদের মধ্যে শান্ত সাঁওতালের নাম রাখা হয় নুরুল হক, আর উত্তম সাঁওতালের নাম রাখ হয় নুরুল ইসলাম। এরপর লাল মিয়া তার বড় মেয়ে জ্যোৎস্না আক্তারকে শান্ত সাঁওতাল-এর সাথে বিয়ে দেন। এই হলো লাল মিয়ার কৌশল!

থানায় না গিয়ে লাল মিয়ার বান্যাছোলা আর্মি ক্যাম্পে হাজির হওয়ার বিষয়টিও রহস্যজনক। সুপ্রভাত বাংলাদেশ পত্রিকার খবর অনুযায়ী ৩ সেপ্টেম্বর ওই আর্মি ক্যাম্পের কমাণ্ডার ক্যাপ্টেন নাফিজকে লালমিয়া ফোন করেছে। তাহলে আত্মগোপনে থাকার সময়ও লাল মিয়ার সাথে এই ক্যাপ্টেনের যোগাযোগ ছিল কিনা তাও দেখার বিষয়।

‘লাল মিয়ার অপহরণ নাটকের কারণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়ে যেতে বসেছিল’ সুপ্রভাত বাংলাদেশ প্রতিনিধির এমন কথার জবাবে ক্যাপ্টেন নাফিজ উত্তেজিত স্বরে বলেছেন ‘যা হওয়ার হতো’। ক্যাপ্টেনের এই কথার মাধ্যমে এটা ধারণা করা যায় তিনি নিজেই এলাকায় সাম্প্রদায়িক সংঘাতের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক সেটা চেয়েছিলেন।

এদিকে, লাল মিয়ার স্বেচ্ছায় নিখোঁজ নাটকের সাথে ক্যাপ্টেন নাফিজও জড়িত থাকতে পারেন- এমনটাই ধারণা এলাকার সচেতন মহলের।
—————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More