খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ স্বতঃস্ফুর্তভাবে পালিত

0

পানছড়িতে তিন কর্মীকে হত্যার প্রতিবাদে ও খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে এই অবরোধ পালন করা হয়।

মানিকছড়িতে খাগড়াছড়ি – চট্টগ্রাম সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে পিকেটাররা।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

খাগড়াছড়ির পানছড়িতে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে সৃষ্ট সেনা মদদপুষ্ট ঠ্যাঙাড়ে নব্য মুখোশ বাহিনী কর্তৃক ইউপিডিএফের তিন কর্মীকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেফতার-শাস্তি ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙে দেয়ার দাবিতে খাগড়াছড়ি জেলায় ইউপিডিএফের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ স্বতঃস্ফুর্তভাবে পালিত হয়েছে।

অবরোধ সফল করতে আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর ২০২৪) সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারী পিকেটাররা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে পিকেটিং করে।

অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি শহর থেকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। উপজেলাগুলোতেও দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সড়কে যানবাহন চলাচল করেনি।  

অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি শহর থেকে বাস-ট্রাকসহ দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে যায়নি।

অবরোধ চলাকালে বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে রামগড়ে পিকেটিংকালে বিজিবির সাথে পিকেটারদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় বলে জানা গেছে। 

ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা এক বিবৃতিতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি সফল করায় জেলার সকল যানবাহন মালিক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউপিডিএফের নেতৃত্বে চলমান অধিকার আদায়ের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে ইউপিডিএফের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ ও নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। গতকাল (৩০ অক্টোবর) পানছড়িতে তিন কর্মীকে হত্যার ঘটনাও তারই ধারাবাহিক অংশ। এর আগে গত বছর বিপুল চাকমাসহ ৪ জনকে হত্যা ও ২০১৮ সালে স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তি না হওয়ায় সন্ত্রাসীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস পাচ্ছে। তিনি এসব ঘটনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।

রামগড়ে অবরোধ সফল করতে খাগড়াছড়ি – ঢাকা মহাসড়কে টায়ার জ্বালায় পিকেটাররা।

অংগ্য মারমা আরো বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পরবর্তী দেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হয়নি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে খুন-গুমসহ নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত সেনা কর্মকর্তাদের এখনো বহাল তবিয়তে রাখা হয়েছে। তারাই এখনো সশস্ত্র নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পাহাড়ের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

বিবৃতিতে তিনি এসব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

অংগ্য মারমা অবিলম্বে পানছড়িতে তিন ইউপিডিএফ কর্মীকে হত্যার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ বাহিনী ভেঙে দেয়া, পার্বত্য চট্টগ্রামে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং হাসিনা সরকারের আমলে নিয়োজিত ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত সেনা কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারসহ বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার জেলার পানছড়ির লতিবান ইউনিয়নের শান্তি রঞ্জন পাড়ায় সেনা মদদপুষ্ট নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীরা ইউপিডিএফের তিন সদস্য মন্যা চাকমা ওরফে সিজন (৫০), খরকসেন ত্রিপুরা ওরফে শাসন (৩৫) ও পরান্টু চাকমা ওরফে জয়েন (২২)-কে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More