রামগড়ে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ, সিএইচটি রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি

রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
আদালতের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসনবিধি সিএইচটি রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে খাগড়াছড়ির রামগড়ে তিন সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই ২০২৪) সকাল সাড়ে ১০টায় “পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে” শ্লোগানে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের রামগড় উপজেলাসমূহ যৌথভাবে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
প্রথমে রামগড় উপজেলা সদরের দাতারাম পাড়া মুখ এলাকা থেকে খাগড়াছড়ি – ঢাকা সড়কে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয। মিছিলটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে যৌথ খামার এলাকায় এসে সমাবেশ মিলিত হয়।

সমাবেশে পিসিপির রামগড় উপজেলা শাখা সভাপতি বাহাদুর ত্রিপুরা সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তৈমাং ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রজেন্টু চাকমা,পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের রামগড় উপজেলা শাখা সভাপতি গুলমনি চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সদস্য নয়ন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রামগড় উপজেলা শাখা সভাপতি লিটন চাকমা।
বক্তারা বলেন, ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজ উদ্দৌল্লার পরাজয়ের পর ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশে হতে শুরু করে সারা বাংলার শাসনক্ষমতা দখল করে নেয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলার পাশাপাশি অঞ্চল হওয়ায় ব্রিটিশদের নজরে আসে। এরপর সুকৌশলে পার্বত্য চট্টগ্রামকেও ব্রিটিশরা জবরদখল করে নেয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম দখল করার পর ব্রিটিশরা এ অঞ্চলে বসবাসরত পাহাড়িদের জন্য স্বতন্ত্র শাসনবিধি ১৯০০ সালের ১ মে সিএইচটি রেগুলেশন জারী করেন। এই শাসনবিধি পাহাড়িদের প্রথাগত আইন, রীতি-নীতি ও ভূমি অধিকারের ওপর রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। তাই পাহাড়িরা যুগ যুগ ধরে এই শাসনবিধি তথা সিএইচটি রেগুলেশন ১৯০০ আইনকে মেনে জীবন-যাপন করে আসছে।

বক্তারা সিএইচটি রেগুলেশন বাতিলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সুকৌশলে আদালতে ব্যবহার করে পাহাড়িদের ন্যূনতম রক্ষাকবচ পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেনশন ১৯০০ বাতিলের ষড়যন্ত্র করছে। সেটলারদের দায়ের করা রিভিউ পিটিশন গ্রহণ করে এদেশের আদালত এ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী ১১ জুলাই সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে এর ওপর শুনানী অনুষ্টিত হবে বলে জানা গেছে।
তারা বলেন, এই সিএইচটি রেগুলেশন বাতিল করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল অবারিত হয়ে যাবে। পাহাড়িরা প্রথাগত আইনি ক্ষমতা ও ভূমি অধিকার হারাবে। এতে করে পাহাড়িদের অস্তিত্ব আরো বেশি সংকটের মুখে পড়বে। তাই এটি রক্ষায় সর্বস্তরের জনগণকে আন্দোলনে সামিল হতে হবে।

সমাবেশ থেকেক বক্তারা ১৯০০ সালের সিএইচটি রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধ করে আইনটি বলবৎ রাখা ও পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রদানের দাবি জানান।
মিছিল ও সমাবেশে “No to military rule in CHT; পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল বন্ধ কর; রাজা-হেডম্যান-কার্বারী প্রথা বাতিল করা যাবে না ও পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ আমার রক্ষাকবচ; ইত্যাদি শ্লোগান সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।