সিএইচটি রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে

কাউখালীর বেতবনিয়ায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে তিন সংগঠনের অবস্থান ধর্মঘট

0


কাউখালী প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

আদালতের মাধ্যমে সিএইচটি রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া বাজারে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে ইউপিডিএফভূক্ত তিন সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ), কাউখালী উপজেলা শাখা।

‘পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দিতে হবে’ ব্যানার শ্লোগানে আজ বুধবার (১০ জুলাই ২০২৪) বেলা ১১.৩০টা হতে ১২:৩০টা পর্যন্ত এক ঘন্টাব্যাপী এই অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় পুলিশ বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। তবে অবস্থানকারীদের সড়ক থেকে তুলে দিতে পারেনি।


পুলিশের বাধা ও ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে অনুষ্ঠিত এ অবস্থান ধর্মঘটে বক্তব্য দেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নিকন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য দয়া সোনা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কাউখালি উপজেলা শাখা সভাপতি থুইনুমং মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাউখালি উপজেলা শাখা সভাপতি দীপায়ন চাকমা। 

দীপায়ন চাকমা তার স্বাগত বক্তব্যে উপস্থিত জনতাকে স্বাগত জানান এবং শ্লোগান দিয়ে জনগণের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করেন। এ সময় তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিছিন্ন কোন জায়গা নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে দশ ভাষাভাষী তেরটি জাতিসত্তার জনগণ যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চলে বসবাস করে আসছেন। ১৯০০ সালের রেগুলেশনে পাহাড়িদের প্রথাগত যে অধিকার ও আইন তার মধ্যে থেকেই পাহাড়িরা ভূমি অধিকার ভোগ করে আসছে। কিন্তু সরকার এই রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র করছে। তাই সবাইকে এই আইন রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে। তিনি ১৯০০  সালের রেগুলেশন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধ করে পাহাড়িদের প্রথাগত অধিকার সুরক্ষার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান।

বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।


নিকন চাকম বলেন, ১৯০০ সালের রেগুলেশন এর মাধ্যমে পাহাড়িরা ভুমি অধিকার ও পাহাড়ি সমাজের রাজা- হেডম্যান- কার্বারীর মতো প্রথাগত নেতৃত্বে মেনে আসছে। এই আইন পাহাড়ি জাতিসত্তার অস্তিত্বের মূল। কাজেই এই আইন বাতিল করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিসত্তাগুলো আরো বেশি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। তাই পাহাড়িদের অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়ার লক্ষ্য সরকার আদালতের মাধ্যমে সুকৌশেল ১৯০০ সালের সিএইচটি রেগুলেশন বাতিল এবং রাজা, হেডম্যান, কার্বারীর পদবীও বিলুপ্ত করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। এর প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের ভূমি কেড়ে নেওয়া ও তাদেরকে নেতৃত্ব শুন্য করা।


তিনি জাতির এই অস্তিত্ব সংকটের মুখে ছাত্র সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণকে আন্দোলনে সামিল হতে হবে। আমরা  যদি ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই-সংগ্রাম জারি রাখতে পারি তাহলে সরকার তার ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে বাধ্য হবে এবং আমরা অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।

অবস্থান ধর্মঘটে ‍“পাহাড় থেকে সেনা শাসন, তুলে নাও; পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধি ১৯০০ আমার রক্ষাকবচ;  পাহাড়িদের প্রথাগত অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে” সহ আরও বিভিন্ন দাবির শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More