শিক্ষাবিদ অনন্ত বিহারী খীসা’র ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

0

অনন্ত বিহারী খীসা। ফাইল ছবি

সিএইচটি নিউজ ডেস্ক
মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আজ ২৫ ফেব্রয়ারি ২০২৫ পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অনন্ত বিহারী খীসার ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২১ সালের আজকের এই দিনে দুপুর বেলায় খাগড়াছড়ি সদরের অনন্ত মাস্টার পাড়ার নিজ বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

অনন্ত বিহারী খীসা ১৯৩৭ সালের ১ নভেম্বর মহালছড়ির খুলারাম পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি খাগড়াছড়ির খবংপুড়িয়া স্কুলে নিম্ন প্রাথমিক শিক্ষা ((শিশু শ্রেণী, প্রথম শ্রেণী ও দ্বিতীয় শ্রেণী), খাগড়াছড়ি এম, ই স্কুলে (Middle English School) তৃতীয় থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর রাঙ্গামাটি সরকারি উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় (High English School) হতে ৭ম শ্রেণী থেকে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় (বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণীর পাবলিক পরীক্ষার তৎকালীন নাম) উত্তীর্ণ হন। তারপর ঢাকার জগন্নাথ কলেজে দু’বছর পড়ার পর চট্টগ্রামের কানুনগো পাড়া স্যার আশুতোষ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে বি,এ পাশ করার পর ছাত্রজীবনের ইতি টানেন। (সূত্র: অনন্ত বিহারী খীসার সাক্ষাতকার)।

অনন্ত বিহারী খীসা একজন অত্যন্ত সৎ, নীতিবান ও গুণী মানুষ ছিলেন। তিনি কখনই যশ, ক্ষমতা ও বিত্তের পিছনে ছুটেননি, যদিও সে সুযোগ তার ছিল। তিনি সচেতনভাবে ক্ষমতা, খ্যাতি ও বিত্তের আকর্ষণ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। 

শিক্ষা বিস্তারে তার বিশাল অবদান ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সূচনালগ্নে ১৯৫০ দশকের শেষের দিকে তিনি পাহাড়ি ছাত্র সমাজকে সংগঠিত করতে ও জাতীয় চেতনার বিকাশ ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

১৯৫৬ সালে তাঁর নেতৃত্বে চট্টগ্রামের কানুনগো পাড়ার শ্রীপুর গ্রামে এক ছাত্র-অভিভাবক সম্মেলনের মাধ্যমে Chittagong Hill Tracts Students’ Association গঠিত হয়। এতে তিনি সভাপতি ও মৃণাল কান্তি চাকমা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। 

তিনি ব্যক্তিগতভাবে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত না হলেও বিভিন্ন সময় শাসকগোষ্ঠী তথা সরকারের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন এবং জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জড়িত নেতাকর্মীদের নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়েছিলেন। সাধারণ জনগণকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে তিনি অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন। যার কারণে তাকে জেলেও যেতে হয়েছে।

পরে তিনি শিক্ষকতার পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৯৬০ সালের ২০ এপ্রিল খাগড়াছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সাল থেকে ৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি সিলেটের কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেখান থেকে বদলি হয়ে ১৯৮৮ সাল থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত খাগড়াছড়ির রামগড় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ’৯৫ সালের ১ নভেম্বর তিনি অবসরে যান।

শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণের পর থেকে আমৃত্যু তিনি বুদ্ধিবৃত্তিক ও সমাজসেবামূলক নানা কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।



This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More