আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ঢাকায় চার সংগঠনের সমাবেশ

0
3

সিএইচটি নিউজ ডটকম

WP_20160308_027আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ ৮ মার্চ বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাব সম্মুখে ৪ সংগঠনের (জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, জাতীয় গণমঞ্চ, জাতীয় গণফ্রন্ট ও নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চা) ‍উদ্যোগে এক সমাবেশ ও প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চ সভাপতি মাসুদ খানের সভাপিতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, জাতীয় গণফ্রন্ট সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চা সভাপতি জাফর হোসেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম সভাপতি মাইকেল চাকমা, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সম্পাদক ডাঃ আব্দুল হাকিম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী মন্টি চাকমা, বিপ্লবী নারী মুক্তির আহ্বায়ক নাছিমা নাসরিন ও বাঙলাদেশ লেখক শিবিরের মৌসুমি বিশ্বাস।

সমাবেশ পরিচালনা করেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সালমান রহমান।

সমাবেশে ফয়জুল হাকিম বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস সার দুনিয়ার শ্রমজীবী নারীদের এক সংগ্রামের দিন। পুঁজিবাদ ব্যবস্থা, ব্যক্তি মালিকানার ব্যবস্থা উচ্ছেদ করে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে নারীর মুক্তি ঘটবে।

টিপু বিশ্বাস বলেন, নারী মুক্তির সাংগ্রাম শুধু নারীর একার নয়, এই সংগ্রাম পুরুষদেরও। নারী পুরুষদের সম্মিলিতভাবে এ সংগ্রাম করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, নারীদেরকে রান্না ঘরের দাসত্ব থেকে নারীকে মুক্ত করতে হবে।

জাফর হোসেন বলেন, সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দেশে দেশে যে সংগ্রাম চলছে সে সংগ্রামে নারীর অংশগ্রহণ সংগ্রামকে জঙ্গীত্ব দিয়েছে।

মাইকেল চাকমা বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে বুর্জোয়ারা অনুষ্ঠানে পরিণত করেছে। তিনি বুর্জোয়া কতৃক পরিচালিত নারীবাদী সংগঠনগুলো নারী মুক্তির সংগ্রামকে বাধাগ্রস্ত করছে উল্লেখ করে বলেন বিদ্যমান সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় নারী মুক্তি সম্ভব নয়।

WP_20160308_060 বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (মা-লে-মা)সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আব্দুল হাকিম বলেন, ১৯৭১ –এ সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করলেও নারীর মুক্তি ঘটেনি। নারী মুক্তির জন্য তাই শ্রমিকশ্রেনীর নেতৃত্বে সংগ্রাম বেগবান করতে হবে।

হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী মন্টি চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নির্যাতন-ধর্ষণ নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। পাহাড়ি নারীদের জীবন আজ বিপন্ন।

মন্টি চাকমা আরো বলেন, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। তিনি ১৯৯৬ সালে রাংগামাটির বাঘাইছড়ি লাল্যাঘোনা থেকে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমাকে সেনাবাহিনী কতৃক অপহরণের ঘটনা স্মরণ করেন।

বিপ্লবী নারী মুক্তির নাছিমা নাসরিন বলেন, পুঁজিবাদ উচ্ছেদের সংগ্রামে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকতে হবে।

বাংলাদেশ লেখক শিবিরের মৌসুমী বিশ্বাস সরকারকে সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশ থেকে ২ লক্ষ নারী শ্রমিক সৌদি আরবে প্রেরণ করার সরকারী সিদ্ধান্তের পর দেখা গেল মাত্র কয়েক হাজার নারী শ্রমিক সেখানে গিয়েছেন। সৌদি আরবে প্রেরণকৃত নারী শ্রমিকদের উপর সেখানকার প্রতিষ্ঠানের নির্যাতন-যৌন নিপীড়ন প্রভৃতি বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নেয়নি।

সমাবেশের সভাপতি মাসুদ খান বলেন, জনগণকে আজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নারী মুক্তির সংগ্রাম নারীবাদে সম্ভব নয়- নারী মুক্তির পথ সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে তাই রাজনৈতিক সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সকল ক্ষেত্রে নারীর উপর বৈষম্য ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই যেমন করতে হবে তেমনি উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তিতে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবী আদায় করতে হবে। এবং সকল লড়াইকে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা-সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদের লড়াইয়ের সাথে যুক্ত করতে হবে।

সমাবেশ শেষে মুক্তির মঞ্চ –এর নেতৃত্বে প্রতিবাদের কবিতা পাঠ ও গণসংঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.