চট্টগ্রাম : বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ এদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহকে সংবিধানে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ১৯৭২ সালে ৪ নভেম্বর সংবিধান গৃহীত হবার পর এ পর্যন্ত ১৬বার সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু কোন সরকারই ভিন্ন সংস্কৃতির ধারক-বাহক জাতিসত্তাসমূহকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়নি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বেলা ২টায় চট্টগ্রাম নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী ও সংখ্যালঘু জাতিসমূহের সাংবিধানিক স্বীকৃত প্রসঙ্গে’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুকৃতি চাকমা, সভা সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক থুইক্যচিং মার্মা। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক রইসুল হক বাহার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুহম্মদ আমীর উদ্দিন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল পূর্ব-৩ অঞ্চলের সভাপতি এড. ভুলন লাল ভৌমিক, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি সোনালী চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মার্মা।
আলোচনা সভায় আলোচকরা বলেন, সংবিধান হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব দেশের সর্বোচ্চ আইন। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নতুন সংবিধান গৃহিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১৬ বার সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু কোন সরকারই পার্বত্য চট্টগ্রামসহ এ দেশে বসবাসরত বিভিন্ন সংস্কৃতি ধারক-বাহক সংখ্যালঘু জাতিসমুহকে যথাযথ সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয় নি। উল্টো আওয়ামীলীগ দ্বিতীয় বারের মত ক্ষমতায় এসে ২০১১ সালের ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংখ্যালঘু জাতিসমুহের উপর বাঙালি পরিচয় জোর করে চাপিয়ে দেয়। যা স্পষ্টত: মুক্তিযুদ্ধ চেতনার পরিপন্থী।
আলোচকরা আরো বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে সংখ্যাগুরু বাঙালি ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্মজাতি সহ দেশের অপরাপর সংখ্যালঘু জাতিগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু এ দেশের শাসকগোষ্ঠী তাদের ন্যায্য অধিকার স্বীকৃতি না দিয়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পদাঙ্ক অনুকরণ করে চলেছে।
আলোচকরা অবিলম্বে সংবিধানে বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামকে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার জন্য জোর দাবি জানান।
——————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।