রাঙামাটি: রাঙামাটির নান্যাচরে সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতন চালিয়ে পিসিপি নেতা এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমেল চাকমাকে হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারী নান্যাচর জোন কমান্ডার মোঃ বাহালুল আলম, মেজর তানভীরসহ জড়িত সেনা সদস্যদের শাস্তির দাবিতে আগামীকাল রবিবার (২৩ এপ্রিল) রাঙামাটি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য জেলাবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রমেল হত্যা প্রতিবাদ কমিটি ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)।
রমেল হত্যা প্রতিবাদ কমিটির আহ্বায়ক সুনন্দা তালুকদার ও পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি বিনয়ন চাকমা, সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা আজ শনিবার (২২ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, সেনাবাহিনীর মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতনের কারণেই ছাত্রনেতা রমেল চাকমার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর পরও সেনারা ক্ষান্ত না হয়ে লাশ ছিনতাই করে সামাজিক, ধর্মীয় রীতি-নীতি উপেক্ষা করে পেট্রোল ঢেলে লাশ পুড়িয়ে ফেলেছে। এর চেয়ে জঘন্য নিষ্ঠুরতা আর কি হতে পারে?
পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সেনাবাহিনীর নির্যাতনের হাত থেকে সাধারণ জনগণ, ছাত্র, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি কেউই রেহায় পাচ্ছে না। প্রতিনিয়তই কেউ না কেউ সেনা হামলার শিকার হচ্ছে। এ অন্যায় আর বেশিদিন চলতে দেয়া যায় না। এর বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনগণকে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ রবিবারের সকাল-সন্ধ্যা সড়ক ও নৌপথ অবরোধ সফল করে অন্যায়-অবিচারে বিরুদ্ধে গর্জে উঠার জন্য জেলার সকল যান মালিক সমিতি, শ্রমিক সংগঠন, ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণে প্রতি আহ্বান জানান।
এছাড়া নেতৃবৃন্দ আগামী ২৫ এপ্রিল রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের সম্মুখে অবস্থান ধর্মঘট ও ২৬ এপ্রিল নান্যাচর বাজার বয়কট কর্মসূচি সফল করারও আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল নান্যাচর উপজেলা পরিষদ এলাকা থেকে মেজর তানভীরের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য রমেল চাকমাকে আটক করে সেনাজোনে নিয়ে যায়। সেখানে অমানুষিক নির্যাতনের ফলে রমেল চাকমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরে সেনারা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে সেনা নজরদারি ও পুলিশ প্রহরায় দুই সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বুধবার (১৯ এপ্রিল) রমেল চাকমা মারা যায়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকালে চমেক থেকে রমেল চাকমার লাশটি বাড়ির উদ্দেশ্যে আনা হলে বুড়িঘাট বাজার এলাকা থেকে সেনাবাহিনী পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে লাশটি ছিনিয়ে নেয় এবং শুক্রবার দুপুরে সামাজিক-ধমীয় রীতি-নীতি ও পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি ছাড়াই পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে ফেলে।
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।