কাউখালি (রাঙামাটি) ॥ নব্য মুখোশ বাহিনীর সহায়তায় সেনাবাহিনী রাঙামাটির কাউখালি উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে অপারেশন চালিয়েছে। এ সময় ৬ নিরীহ গ্রামবাসী আটক ও তাদের মধ্যে একজন মারধরের শিকার হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
খাগড়াছড়ি জেলা সদর জোনের মেজর রফিকের নেতৃত্বে আর্মিরা ২২ জানুয়ারী রাত থেকে এ অপারেশন চালায়। তবে স্থানীয় ঘাগড়া চাম্পাতলি জোন ও কাউখালি ক্যাম্পের সেনারাও এতে অংশ নেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অপারেশন চালিয়ে সেনারা আজ সকালে ফিরে যায়।
অপারেশনের সময় সেনাদের সাথে মুখোশ পরা অবস্থায় তিন জন নব্য মুখোশ বাহিনীর (নমুবা) সদস্য ছিল জানা গেছে, তাদের মধ্যে দু’জনকে এলাকার লোকজন চিনতে পেরেছেন বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
মুখোশ পরা স্পাইদের একজন হলো নব্য মুখোশ বাহিনী বা দেরোতপুজ্যার প্রধান সর্দার তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা। সে একজন দুর্ধর্ষ খুনী এবং বহু মামলার আসামী। সম্প্রতি মিঠুন চাকমাসহ যে তিন জন খুন হয়েছেন তার জন্য বর্মার নব্য মুখোশ বাহিনী ও জেএসএস সংস্কারপন্থীদের একাংশ চার কুচক্রীকে দায়ি করা হয়।
অপর জনের নাম ইমন চাকমা ওরফে এ্যাবঙ। সেও নব্য মুখোশ বাহিনীর সদস্য। সে এক সময় ইউপিডিএফ এর সাথে জড়িত হলেও, অকর্মণ্য ও অলস হওয়ার কারণে তাকে পার্টি থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।
এ্যাবঙের পরিবার (বাবা) বেশ কয়েক বছর আগে বান্দরবানে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) কর্তৃক উচ্ছেদের শিকার হলে বরকলের মরংছড়িতে চলে আসতে বাধ্য হয়। সেখানেও তারা শান্তিবাহিনী কর্তৃক নিগৃহীত হয় এবং পরে কাচালঙে চলে যায়।
রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক নিগ্রহ ও উচ্ছেদের শিকার হওয়ার পরও সে আর্মিদের স্পাইগিরি করছে জেনে কাউখালিবাসী তার প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছেন।
এলাকাবাসীর সূত্রে আরো জানা যায়, সেনারা দুই-তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অপারশেন চালায়। তারা প্রথমে তালুকদার পাড়ায় গিয়ে শান্তিময় তালুকদার (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে। তাকে অবশ্য পানছড়ি থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
পরদিন সকালে উগলছড়ি থেকে আটক করা হয় বেলে চাকমাকে (২৫)। তার পিতার নাম শুনিয়া। তিনি এ সময় নিজ বাড়িতে আগুন পোহাচ্ছিলেন।
পরে পোড়া পাড়া থেকে বৃষ সেনা চাকমার ছেলে সুবল কৃঞ্চ চাকমা (২৭), আঝাছড়িতে কান্দরসিং চাকমার ছেলে রিটেন চাকমা (৩৫), ফটিকছড়ি ইউনিয়নের ন-ভাঙা গ্রাম থকে সূর্যবাহু চাকমার ছেলে সোনামুনি চাকমা (৩৮) ও একই ইউনিয়নের দবাকাবা গ্রাম থেকে কামিনী কুমার চাকমার ছেলে শশী ভূষণ চাকমাকে (৫৫) আটক করা হয়।
এদের মধ্যে সোনমুনি চাকমাকে আর্মিদের সঙ্গে থাকা স্পাইরা মারধর করে।
সুবল কৃঞ্চ চাকমা একজন সিদোল ব্যবসায়ী, তিনি গতকাল ব্যবসার কাজে বর্মাছড়ি বাজারে যাচ্ছিলেন। সে সময় তাকে সেনারা আটক করে।
অপরদিকে রিটেন চাকমা ন-ভাঙা ছড়া থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। অপারেশনের পর বাকিদেরও ছেড়ে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারী তালুকদার পাড়া ও ঘিলাছড়ি এলাকায় টহল দেয়ার সময় এক সেনা কমান্ডার ইউপিডিএফ-কে উদ্দেশ্য করে গ্রামবাসীর কাছে বলেছিলেন, ‘তাদের বাবারা (অর্থাৎ নব্য মুখোশ বাহিনীর সদস্যরা) আসুক, তখন বুঝবে মজা!’
বিস্তারিত দেখুন: (http://chtnews.com/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%89%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE/)
——————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।