ঢাকা : ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের ৫০তম বার্ষিকীতে গত ২৪ জানুয়ারি বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্ত্বরে সড়ক দ্বীপে আয়োজিত আলোচনা সভায় জাতীয় নেতৃবৃন্দ গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্বপ্ন-চেতনা বাস্তবায়নে আরেকটি গণজাগরণ-গণঅভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বক্তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তভেজা পথে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত হয়েছিল। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উত্থান ঘটে। কিন্তু শহীদেরা সাম্যভিত্তিক যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা আজও অর্জিত হয়নি; ভোটাধিকারসহ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ভূলুন্ঠিত।

বক্তারা আরো বলেন, উন্নয়নের ধুয়ো তুলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে; গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দমন-পীড়ন, সন্ত্রাস-গুম-খুনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরী করে স্বৈরতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী ক্ষমতাকে আরো পাকাপোক্ত করা হয়েছে। এক নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ববাদী শাসনে রাষ্ট্রীয় সম্পদের বেপরোয়া লুন্ঠন, দুর্বৃত্তায়ন ও দলীয়করণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনার বিপরীতে দেশকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠি নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে গোটা রাষ্ট্রকে আজ জনগণের বিরুদ্ধে দাড় করিয়ে দিয়েছে। নেতৃবৃন্দ এই অবস্থার পরিবর্তনে বিদ্যমান স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণসংগ্রাম বিকশিত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ৬৮’র ডিসেম্বরে পাকিস্তানী স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে যে গণআন্দোলন শুরু করেছিলেন সেই গণজাগরণই পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানের রূপ। পাকিস্তানী স্বৈরশাসকদেরকে পিছু হটতে বাধ্য করে।

৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের ৫০ বছর পালন জাতীয় কমিটির সমন্বয়ক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ (মার্কসবাদী) এর আহ্বায়ক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়জুল হাকিম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় নেতা নুতন কুমার চাকমা, গরীব মুক্তি আন্দোলনের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান মিলন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা মমিনুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক, শহীদ আসাদের বড় ভাই রশিদুজ্জামান, কাজী আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

সভা পরিচালনা করেন নজরুল ইসলাম।
আলোচনা সভার শুরুতে ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে শহীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এবং সভা শেষে সংস্কৃতি পর্ষদ ও মুক্তির মঞ্চ’র এর শিল্পীরা গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন।

নবকুমার ইনস্টিটিউটে মতিউর স্মৃতি বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ এর আগে গণঅভ্যুত্থান বার্ষিকীতে জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পদযাত্রা করে নবকুমার ইনস্টিটিউটে মতিউর স্মৃতি বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন এবং সেখানে মতিউরের পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির সমন্বয়ক সাইফুল হক।

সূত্র : প্রেস বিজ্ঞপ্তি
———————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।
———————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।
fasibad nipat jak, ganotantra mukti pak.